পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ग१:श রোগীর নববর্ষ আমার রোগশয্যার উপর নববৎসর আসিল । নববৎসরের এমন নবীন মূর্তি অনেক দিন দেখি নাই । একটু দূরে আসিয়া না দাড়াইতে পারিলে কোনো বড়ে জিনিসকে ঠিক বড়ো করিয়া দেখা যায় না। যখন বিষয়ের সঙ্গে জড়িত হইয়া থাকি তখন নিজের পরিমাণেই সকল জিনিসকে খাটো করিয়া লই । তাহা না করিলে প্রতিদিনের কাজ চলে না। মানুষের ইতিহাসে যত বড়ো মহৎ ঘটনাই ঘটুক না নিজের পেটের ক্ষুধাকে উপস্থিতমতে যদি একান্ত করিয়া না দেখা যায় তবে বাচাই শক্ত হয়। যে মজুর কোদাল হাতে মাটি খুড়িতেছে সে লোক মনেও ভাবে না যে সেই মুহূর্তেই রাজা-মহারাজার মন্ত্রণাসভায় রাজ্যসাম্রাজ্যের ব্যবস্থা লইয়া তুমুল আন্দোলন চলিতেছে। অনাদি অতীত ও অনস্ত ভবিষ্কং যত বড়োই হ’ক, তবু মানুষের কাছে এক মুহূর্তের বর্তমান তাহার চেয়ে ছোটো নয়। এই জন্য এই সমস্ত ছোটো ছোটো নিমেষগুলির বোঝা মানুষের কাছে ষত ভারি এমন যুগ-যুগান্তরের ভার নহে ;–এই জন্ত তাহার চোখের সামনে এই নিমেষের পর্দাটাই সকলের চেয়ে মোট ;- যুগ-যুগান্তরের প্রসারের মধ্যে এই পর্দার স্কুলত ক্ষয় হইয়া যাইতে থাকে। বিজ্ঞানে পড়া যায় পৃথিবীর গায়ের কাছের বাতাসের আচ্ছাদনটা ষত ঘন, এমন তাহার দূরের আচ্ছাদন নহে,—পৃথিবীর নিচের টানে ও উপরের চাপে তাহার আবরণ এমন নিবিড় হইয় উঠে । আমাদেরও তাই। যত আমাদের কাছের দিকে, ততই আমাদের নিজের টানে ও পরের চাপে আমাদের মনের উপরকার পর্দা অত্যন্ত cवनि निदब्रछे झ्हेब्रा नैंॉक्लांब्र । - শাস্ত্রে তাই বলে আমাদের সমস্ত আবরণ আসক্তিরই অর্থাৎ আকর্ষণেরই রচনা। নিজের দিকে যতই টান দিব নিজের উপরকার ঢাকাটাকে ততই ঘন করিয়া তুলিব। এই টান হালকা হইলে তবেই পর্দা ফাক হইয়া যায়। i দেখিতেছি গণ শরীরের দুর্বলতায় এই টানের গুছিটাকে খানিকটা আলগা করিয়া দিয়াছে। নিজের চারিদিকে যেন অনেকখানি ফাকা ঠেকিতেছে । কিছু একটা করিতেই হইবে, কল একটা পাইতেই হইবে, আমার হাতে কাজ আছে আমি না হইলে তাহ সম্পন্নই হইবে না এই চিন্তায় নিজেকে একটুও অবসর দেওয়া ঘটে না, অবসরটাকে যেন