পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. ぶ সঞ্চয় •ථ8Q জানে না যে আজ আমরা ইহাকে লইয়াই আনন্দ করিতেছি, জানে না বাহিরে কী ঘটতেছে, জানে না ইহার নিজের মধ্যে কী আছে-এই অপরিস্ফুটতার মধ্যেই তো ইহার সীমা নহে। এই কন্যাটি যখন একদিন রমণীরূপে বিকসিত হইয়া উঠিবে তখনই কি এ আপনার চরমকে,লাভ করিবে? তখনও এই মেয়েটি নিজেকে বাহ বলিয়া জানিবে এ কি তাহার চেয়েও অনেক বড়ো নহে! মানুষের মধ্যে এই যে একটি অপরিমেয়ত আছে যাহা তাহার সীমাকে কেবলই অতিক্রম করিয়া চলিয়াছে তাহাই কি তাহার সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ পরিচয় নহুে ? মানুষ যেদিন নিজের মধ্যে আপনার এই সত্য পরিচয়টি জানিতে পারে সেই দিনই সে ক্ষুদ্রতার জাল ছেদন করিবার শক্তি পায়, সেই দিনই সে উপস্থিত স্বার্থকে লক্ষ্য বলিয়া স্বীকার করে না, সেই দিনই সে চিরন্তন মঙ্গলকেই আপনার বলিয়া বরণ করিয়া লয়। ষে মহাপুরুষের মানুষকে সত্য করিয়া চিনিয়াছেন তাহারা তো আমাদের মর্ত্য বলিয়া জানেন না, তাহার আমাদের ডাক দিয়া বলেন, তোমরা "অমৃতস্ত পুত্ৰা ।” আমরা অমিতা নামে সেই অমৃতের পুত্ৰীকেই আমাদের সমাজে আহবান করিলাম। এই নামটি ইহাকে আপন মানবজন্মের মহত্ব চিরদিন স্মরণ করাইয়া দিক আমরা ইহাকে এই আশীৰ্বাদ করি। আমাদের দেশে নামকরণের সঙ্গে আর একটি কাজ আছে সেটি অন্নপ্রাশন। দুটির মধ্যে গভীর একটি যোগ রহিয়াছে। শিশু যে দিন একমাত্র মায়ের কোল অধিকার করিয়া ছিল সেদিন তাহার অল্প ছিল মাতৃস্তন্য । সে অল্প কাহাকেও প্রস্তুত করিতে হয় নাই—য়ে একেবারে তাহার একলার জিনিস, তাহাতে আর কাহারও অংশ ছিল না। আজ সে নাম দেহ ধরিয়া মামুষের সমাজে আসিল তাই আজ তাহার মুখে মানবসাধারণের অল্পকণাটি উঠিল । সমস্ত পৃথিবীতে সমস্ত মানুষের পাতে পাতে যে অল্পের পরিবেষণ চলিতেছে তাহারই প্রথম অংশ এই কন্যাটি আজ লাভ করিল। এই অন্ন সমস্ত সমাজে মিলিয়া প্রস্তুত্ত করিয়াছে—কোন দেশে কোন চাষা রৌদ্রবৃষ্টি মাথায় করিয়া চাষ করিয়াছে, কোন বাহক ইহা বহন করিয়াছে, কোন মহাজন ইহাকে হাটে আনিয়াছে, কোন ক্রেতা ইহা ক্রয় করিয়াছে, কোন পাচক ইহা রন্ধন করিয়াছে, তবে এই কন্যার মুখে ইহা উঠিল। এই মেয়েটি আজ মানবসমাজে প্রথম আতিথ্য লইতে আসিয়াছে, এই জন্ত সমাজ আপনার অন্ন ইহার মুখে তুলিয়া দিয়া অতিথিসৎকার করিল। এই অল্পটি ইহার মুখে কুলিয়া দেওয়ার মধ্যে মস্ত একটি কথা আছে। মানুষ ইহার দ্বারাই জানাইল আমার বাহা কিছু আছে তাহাতে তোমার অংশ আমি স্বীকার করিলাম। আমার জ্ঞানীরা যাহা জানিয়াছেন তুমি তাহ জানিবে, 88 سے بbہلا