পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঞ্চয় , \מילס স্বাস্থ্যকে টাকা পয়সার মতো হাতে তুলিয়া'দেওয়া যায় না কিন্তু আহুকুল্যের আর ভিতরের দিক হইতে তাহাকে জাগাইয়া তোলা যায়। তেমনি মামুষের প্রকৃতিনিহিত এই অনন্তের বোধকে তাহার এই ধর্ম-প্রবৃত্তিকে ইতিহাস ভূগোল অঙ্কের মতো ইস্কুলকমিটির শাসনাধীনে সমর্পণ করা যায় না ; ইনস্পেক্টরের তদন্তজালে তাহার উন্নতির পরিমাণ ধরা পড়ে না, এবং পরীক্ষকের নীল পেন্সিলের মার্ক দ্বারা তাহার ফলাফল চিহ্নিত হওয়া অসম্ভব ; কেবল সর্বপ্রকার অমুকুল অবস্থার মধ্যে রাখিয়া তাহার সর্বাঙ্গণ পরিণতি সাধন করা যাইতে পারে, তাহাকে বাধা নিয়মে বিদ্যালয়ে দেওয়া-নেওয়ার ব্যবসায়ের জিনিস করা যাইতে পারে না । সাধকেরা আপনারাই বলিয়াছেন তাহাকে পাইবার পথ, “ন মেধয়া ন বহুনা শ্রতেন।” অর্থাং এটা কোনোমতেই পঠন পাঠনের ব্যাপার নহে। কিন্তু কেমন করিয়া সাধকের এই পূর্ণতার উপলব্ধিতে গিয়া উপনীত হইয়াছেন তাহ আজ পর্যন্ত কোনো মহাপুরুষ আমাদিগকে বলিয়া দিতে পারেন নাই। র্তাহারা কেবল বলেন, বেদাহমেতম, আমি জানিয়াছি, আমি পাইয়াছি। র্তাহারা বলেন, য এতদ্বিছরমুতাস্তে ভবস্তি যাহার। ইহাকে জানেন, র্তাহারাই অমৃত হন। কেমন করিয়া ষে তাহারা ইহাকে জানেন সে অভিজ্ঞতা এতই অস্তরতম যে, তাহা তাহাদের নিজেদেরই গোচর নহে। সে রহস্ত যদি তাহার প্রকাশ করিয়া দিতে পারিতেন তবে ধর্মশিক্ষা লইয়া আজ কোনোরূপ তর্কই থাকিত না । 韌 অথচ ঈশ্বরের বোধ কেমন করিয়া পূর্ণভাবে উদ্বোধিত করা যাইতে পারে এরূপ প্রশ্ন করিলে কোনো কোনো মহাত্মা অত্যন্ত বাধা প্রণালীর উপদেশ দিয়াছেন তাহাও দেখা গিয়াছে। একদিকে যেমন একদল মহাপুরুষ বলিয়াছেন, চিত্তকে শুদ্ধ করে, পাপকে দমন করে, ঈশ্বরের বোধ অন্তরের সামগ্ৰী, অতএব অন্তরকেই আপন আন্তরিক চেষ্টায় উদ্বোধিত করিয়া তোলে, অপরদিকে তেমনি আর এক দল বিশেষ বিশেষ বাহপ্রক্রিয়ার কথাও বলিয়াছেন। কেহব বলেন, যজ্ঞ করে, কেহব বলেন বিশেষ শৰ উচ্চারণ করিয়া বিশেষ মূর্তিকে ধ্যান করে, এমন কি, কেহ বা বলেন মাদক পদার্থের দ্বার অথবা অন্ত নানা উপায়ে শারীরিক উত্তেজনার সাহাষ্যে মনকে তাড়না করিয়া দ্রুতবেগে সিদ্ধিলাভের দিকে অগ্রসর হইতে থাকে। । தம் এমনি করিয়া যখনই চেষ্টাকে বাহিরের দিকে বিক্ষিপ্ত করিবার উপদেশ দেওয়া হয় তখনই প্রমাদের পথ খুলিয়া দেওয়া হয়। তখনই মিথ্যাকে ঠেকাইয়া রাখা যায় না, কল্পনাকে সংযত করা অসাধ্য হয়, তখনই মানুষের বিশ্বাসমুখতা যুদ্ধ হইয়া উঠিয়া কোথাও আপনার সীমা দেখিতে পায় না ; মাস্থ্য আপনাকে ভোলায়, অষ্টকে ভোলায় ;