পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

離w রবীন্দ্র-রচনাবলী ولاه به আমাকে লোকে বলিৰে শুধু কবিত্ব কৱিলে চলিবে না—একটা প্র্যাক্টক্যাল পরামর্শ দাও, অত্যন্ত বেশি আশা করাটা কিছু নয়। অত্যন্ত বেশি আশা চুলোয় যাক, লেশমাত্র আশা না করিয়াই অধিকাংশ পরামর্শ দিতে হয় । কিছু করিবার এবং হইবার আগে ক্ষেত্রটাতে দৃষ্টি তে পড়ুক। কোনোমতে মনটা যদি একটু উলখুল করিয়া ওঠে তাহলেই আপাতত যথেষ্ট। এমন কি, লোকে যদি গালি দেয় এবং মারিতে আসে তাহলেও বুৰি, ষে, একটা বেশ উত্তম-মধ্যম ফল পাওয়া গেল। অতএব পরামর্শে নাম যাক । আজকাল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা প্রশস্ত পরিমণ্ডল তৈরি হইয়া উঠিতেছে। একদিন মোটের উপর ইহা একজামিন পাশের কুস্তির আখড়া ছিল । এখন আখড়ার বাহিরেও ল্যাঙটটার উপর ভদ্রবেশ ঢাকা দিয়া একটু হাক ছাড়িবার জায়গা করা হইয়াছে। কিছুদিন হইতে দেখিতেছি বিদেশ হইতে বড়ো বড়ো অধ্যাপকেরা আসিয়া উপদেশ দিতেছেন,— এবং আমাদের দেশের মনীষীদেরও এখানে আসন পড়িতেছে। শুনিয়াছি বিশ্ববিদ্যালয়ের এইটুকু ভদ্রতাও আগু মুখুজ্যে মশায়ের কল্যাণে ঘটিয়াছে । আমি এই বলি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন বাড়িটার ভিতরের আঙিনায় যেমন চলিতেছে চলুক,—কেবল তার এই বাহিরের প্রাঙ্গণটাতে যেখানে আমৃদরবারের নূতন বৈঠক বসিল সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাটাকে যদি সমস্ত বাঙালির জিনিস করিয়া তোলা যায় তাতে বাধাটা কী ? আহুত ধারা তার ভিতর বাড়িতেই বসুক-আর রবাহুত যারা তারা বাহিরে পাত পাড়িয়া বসিয়া যাক না । তাদের জন্ত বিলিতি টেবিল না হয় না রইল, দিশি কলাপাত মন্দ কী? তাদের একেবারে দরোয়ান দিয়া ধাক্কা মারিয়া বিদায় করিয়া দিলে কি এ ষজ্ঞে কল্যাণ হইবে ? আভিশাপ লাগিবে না কি ? এমনি করিয়া বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি এবং বাংলা ভাষার ধারা যদি গঙ্গাযমুনার মতে মিলিয়া যায় তবে বাঙালি শিক্ষার্থীর পক্ষে এটা একটা তীর্থস্থান হইবে। দুই স্রোতের সাদা এবং কালে রেখার বিভাগ থাকিবে বটে কিন্তু তারা এক সঙ্গে বহিয়া চলিবে। ইহাতেই দেশের শিক্ষা যথার্থ বিস্তীর্ণ হইবে, গভীর হইবে, সত্য হইয়া উঠিবে। s শহরে যদি একটিমাত্র বড়ে রাস্ত থাকে তবে সে পথে বিষম ঠেলাঠেলি পড়ে। শহর-সংস্কারের প্রস্তাবের সময় রাস্ত বাড়াইয়া ভিড়কে ভাগ করিয়া দিবার চেষ্টা হয় ; আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝখানে আর একটি সদর রাস্ত খুলিয় দিলে ঠেলাঠেলি নিশ্চয় কমিৰে। I ...”