পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী অভিভূত আলোকের মূছাতুর মান অসম্মানে দিগন্ত আছিল বাষ্পাকুল । যেন চেয়ে ভূমিপানে অবসাদে অবনত ক্ষীণশ্বাস চির প্রাচীনত। স্তন্ধ হয়ে আছে বসে দীর্ঘকাল, ভুলে গেছে কথা, ক্লান্তিভারে উমাখিপাতা বদ্ধপ্রায় । o শূন্যে হেনকালে জয়শখ উঠিল বাজিয়া । চন্নতিলক ভালে শরৎ উঠিল হেসে চমকিত গগন-প্রাঙ্গণে ; পল্লবে পল্পবে কাপি বনলক্ষ্মী কিঙ্কিণী কঙ্কণে বিচ্ছুরিল দিকে দিকে জ্যোতিঙ্কণী । আজি হেরি চোখে কোন অনির্বচনীয় নবীনেরে তরুণ আলোকে । যেন আমি তীর্থযাত্রী অতিদূর ভাবীকাল হতে মন্ত্রবলে এসেছি ভাসিয়া । উজান স্বপ্নের স্রোতে অকস্মাৎ উত্তরিতু বর্তমান শতাব্দীর ঘাটে যেন এই মুহূর্তেই । চেয়ে চেয়ে বেলা মোর কাটে । আপনারে দেখি আমি আপন বাহিরে, যেন আমি অপর যুগের কোনো অজানিত, সম্ভ গেছে নামি সত্তা হতে প্রত্যহের আচ্ছাদন ; অক্লাস্ত বিস্ময় যার পানে চক্ষু মেলি তারে যেন অঁাকড়িয়া রয় পুষ্পলগ্ন ভ্রমরের মতো । এই তো ছুটির কাল, সর্ব দেহমন হতে ছিন্ন হল অভ্যাসের জাল, নগ্ন চিত্ত মগ্ন হল সমস্তের মাঝে । মনে ভাবি, পুরানোর দুর্গদ্বারে মৃত্যু যেন খুলে দিল চাবি, নুতন বাহিরি’ এল ; তুচ্ছতার জীর্ণ উত্তরীয় ঘুচাল সে ; অস্তিত্বের পূর্ণ মূল্যে কী অভাবনীয় প্রকাশিল তার স্পর্শে, রজনীর মৌন সুবিপুল প্রভাতের গানে সে মিশায়ে দিল ; কালে তার চুল পশ্চিমদিগস্তপারে নামহীন বন-নীলিমায় বিস্তারিল রহস্ত নিবিড় । আজি মুক্তিমন্ত্র গায়