পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ○8 রবীন্দ্র-রচনাবলী হারায়, যেমন বাইজির নাচ। এই পণ্যজীবিনী নৃত্যকলাকে তার দুর্বলতা থেকে তার সমলতা থেকে উদ্ধার করো। সে মন ভোলাবার জন্যে নয়, মন জাগাবার জন্যে। বসস্তের বাতাস অরণ্যের প্রাণশক্তিকে বিচিত্র সৌন্দর্যে ও সফলতায় সমুৎসুক করে তোলে। তোমার নৃত্যে স্নানপ্ৰাণ দেশে সেই আনন্দের বাতাস জাগুক, তার সুপ্ত শক্তি উৎসাহের উদ্দাম ভাষায় সতেজে আত্মপ্রকাশ করতে উদ্যত হয়ে উঠুক, এই আমি কামনা করি। ইতি প্ৰবাসী Si? >○8の স্বামী শিবানন্দ দেশে যে-সকল মহৎ প্রতিষ্ঠানে মানুষই মুখ্য, কর্মব্যবস্থা গীেণ, মানুষের অভাব ঘটিলে তাঁহাদের প্রাণশক্তিতে আঘাত লাগে। শিবানন্দ স্বামীর মৃত্যুতে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আশ্রমে সেই দুৰ্যোগ ঘটিল। এখন যাঁরা বর্তমান আছেন, প্ৰাণ দিয়া মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব তীহাদেরই। অহমিকা বর্জিত পরস্পর ঘনিষ্ঠতার প্রয়োজন এখন আরও বাড়িয়া উঠিল। নহিলে শূন্য পূর্ণ হইবে না এবং সেই ছিদ্রপথে বিশ্লিষ্টতার আক্ৰমণ আশ্রমের অস্তরে প্রবেশ করিতে পারে, সেই আশঙ্কা অনুভব করিতেছি। মহাপুরুষের কীর্তি ও স্মৃতি রক্ষার মহৎভাব যাঁহাদের উপরে তীহারা নিজেদের ভুলিয়া সাধনাকে অক্ষুন্ন রাখিবার এক লক্ষ্যে সকলে সম্মিলিত হইবেন- শিবানন্দ স্বামী তাঁহার মৃত্যুর মধ্যে এই বাণী রাখিয়া গিয়াছেন। দােল পূর্ণিমা ১৩৪০ २२ श्रृन्न >७8० ”یہ 2K3. SS8o নন্দলাল বসু স্পিনোজা ছিলেন তত্ত্বজ্ঞানী, তার তত্ত্ববিচারকে তার ব্যক্তিগত পরিচয় থেকে স্বতন্ত্র করে দেখা যেতে পারে। কিন্তু যদি মিলিয়ে দেখা সম্ভব হয় তবে তঁর রচনা আমাদের কাছে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। প্রথম বয়সেই সমাজ তাকে নির্মমভাবে ত্যাগ করছে কিন্তু কঠিন দুঃখেও সত্যকে তিনি ত্যাগ করেন নি। সমস্ত জীবন সামান্য কয় পয়সায় তীর দিন চলত; ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই তঁাকে মোটা অঙ্কের পেনসন দেবার প্রস্তাব করেছিলেন, শর্ত ছিল এই যে তার একটি বই রাজার নামে উৎসর্গ করতে হবে। স্পিনোজা রাজি হলেন না। তার কোনো বন্ধু মৃত্যুকালে আপন সম্পত্তি তাকে উইল করে দেন, সে সম্পত্তি তিনি গ্ৰহণ না করে দাতার ভাইকে দিয়ে দেন। তিনি যে তত্ত্বজ্ঞানী ছিলেন, আর তিনি যে মানুষ ছিলেন এ দুটােকে এক কোঠায় মিলেয়ে দেখলে তার সত্য সাধনার যথার্থ স্বরূপটি পাওয়া যায়, বোঝা যায় কেবলমাত্র তার্কিক বুদ্ধি থেকে তার উদ্ভব নয়, তার সম্পূর্ণ স্বভাব থেকে তার উপলব্ধি ও প্রকাশ। শিল্পকলায় রসসাহিত্যে মানুষের স্বভাবের সঙ্গে মানুষের রচনার সম্বন্ধ বোধ করি আরো ঘনিষ্ঠ। সব সময়ে তাদের একত্র করে দেখবার সুযোগ পাই নে। যদি পাওয়া যায়। তবে তাদের কর্মের আকৃত্রিম সত্যতা সম্বন্ধে আমাদের ধারণা স্পষ্ট হতে পারে। স্বভাবকবিকে স্বভাবশিল্পীকে কেবল যে আমরা দেখি তাদের লেখায়, তাদের হাতের কাজে তা নয়, দেখা যায়। তাদের ব্যবহারে, তাদের দিনযাত্রায়, তাদের জীবনের প্রাত্যহিক ভাষায় ও ভঙ্গিতে। চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুর নাম আমাদের দেশের অনেকেরই জানা আছে। নিঃসন্দেহে আপন আপন রুচি মেজাজ শিক্ষা ও প্রথাগত অভ্যাস অনুসারে তঁর ছবির বিচার অনেকে অনেক রকম