পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰবন্ধ SSG এই একটি নূতন ভূমিকা রচনা প্রমথর প্রধান কৃতিত্ব। আমি তার কাছে ঋণ স্বীকার করতে কখনো কুষ্ঠিত হই নি। প্রমথর গল্পগুলিকে একত্র বার করা হচ্ছে এতে আমি বিশেষ আনন্দিত, কেননা, গল্পসাহিত্যে তিনি ঐশ্বর্য দান করেছেন। অভিজ্ঞতার বৈচিত্র্যে মিলেছে তার অভিজাত মনের অনন্যতা, গাথা হয়েছে উজজুল ভাষার শিল্পে। বাংলা দেশে তার গল্প সমাদর পেয়েছে, এই সংগ্ৰহ প্ৰতিষ্ঠার কাজে সহায়তা করবে। অনেকদিন পর্যন্ত আমাদের দেশ তীর সৃষ্টিশক্তিকে যথোচিত গৌরব দেয় নি। সেজন্য আমি বিস্ময় বোধ করেছি। আজ ক্রমশ যখন দেশের দৃষ্টির সম্মুখে তীর কীর্তির অবরোধ উন্মোচিত হল তখন আমি নিস্তেজ এবং জরার অন্তরালে তাঁর সঙ্গ থেকে দূরে পড়ে গেছি। তাই তার সম্মাননাসভায় দুর্বল স্বাস্থ্যের জন্য যথাযোগ্য আসন গ্রহণ করতে পারলেম না। বাহির থেকে তার কোনো প্রয়োজন নেই অস্তরেই অভিনন্দনের আসন প্রসারিত করে রাখলুম, দলপুষ্টির জন্য নয়। আমার মালা এতকাল একাকী তার কাছে সর্বলোকের অগোচরে অপিত হয়েছে আজও একাকীই হবে। আজ বিরলেই না-হয় তাকে আশীৰ্বাদ করে বন্ধুকৃত্য সমাপন করে যাব। |S७8०] • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার জীবনের প্রাস্তভাগে যখন মনে করি সমস্ত দেশের হয়ে কাকে বিশেষ সম্মান দেওয়া যেতে পারে তখন সর্বাগ্ৰে মনে পড়ে অবনীন্দ্রনাথের নাম। তিনি দেশকে উদ্ধার করেছেন আত্মনিন্দ থেকে, আত্মগ্লানি থেকে তাকে নিষ্কৃতি দান করে তার সম্মানের পদবী উদ্ধার করেছেন। তাকে বিশ্বজনের আত্ম-উপলব্ধিতে সমান অধিকার দিয়েছেন। আজ সমস্ত ভারতে যুগান্তরের অবতারণা হয়েছে চিত্রকলায় আত্ম-উপলব্ধিতে । সমস্ত ভারতবর্ষ আজ তার কাছ থেকে শিক্ষাদান গ্ৰহণ করেছে। বাংলাদেশের এই অহংকারের পদ তারই কল্যাণে দেশে সর্বোচ্চ স্থান গ্রহণ করেছে। একে যদি আজ দেশলক্ষ্মী বরণ করে না নেয়, আজও যদি সে উদাসীন থাকে, বিদেশী খ্যাতিমানদের জয়ঘোষণায় আত্মাবমান স্বীকার করে নেয়, তবে এই যুগের চরম কর্তব্য থেকে বাঙালি ভ্ৰষ্ট হবে। তাই আজ আমি তাকে বাংলাদেশে সরস্বতীর বরপুত্রের আসনে সর্বাগ্রে আহবান করি। শান্তিনিকেতন Σ \Ο SS8)