পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RNR br রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী বঁধিবে কী করে? আমার মনকে শ্রদ্ধা করে যদি না পাও। তবে অপমান করে কিছুতেই পাবে না। কারাগারের দরজা বানিয়েছিল আমার আপন মনের অন্ধবিশ্বাস, আজ ভেঙেছে আমার সেই বিশ্বাস। আজ আমি মুক্ত। ' মধুসূদন। তা হলে তুমি কী করবে? কুমুদিনী। যাব তোমার ঘরে। যদি আমাকে বরণ করে নিতে পার তো নিয়ো ; যদি না পার তো জেনো, আমার মন ছুটি পেয়েছে, আমাকে পারবে না ধরে রাখতে। আর কোথাও আশ্রয় যদি না থাকে, যম তো আমাকে ঠেলতে পারবে না। মধুসূদন। তা হলে আসবে তুমি, এখনি আসবে? কুমুদিনী। হাঁ, আসব। বিপ্রদাস। কুমু, যাবি তুই ? কুমুদিনী। হাঁ, যাব দাদা। বন্দিনী হয়ে নয়, আপনি সম্মান নিয়ে যাব।— যাব সেইখানে যেখানে যাবার আসবার দরজা সমান খোলা রয়েছে। একদিন ভেবেছিলুম, আমার অদৃষ্টের বিধান, খাচার মধ্যেই পুজোর ঘর বানাতে হবে। আজ জেনেছি, পুজো খাঁচার বাইরে। আর কারো দাসীকে আমার দেবতা তার আপনি দাসীর সম্মান দেবেন না। বিপ্ৰদাস। তা হলে তোর যাওয়া স্থির হল ? কুমুদিনী। হাঁ দাদা, মনের মধ্যে বেড়ি খসেছে, তাই যাচ্ছি, নইলে যেতোম না। দাদা, আশীর্বাদ করে বলো, আমাকে কেউ বন্দী করতে পারবে না, বন্দীশালার মধ্যেও নয়। বিপ্ৰদাস। কেউ পারবে না, কেউ না, কারো অধিকার নেই। মধুসূদনের হাত ধরে কুমুদিনী। চলো, তবে যাই আমাদের ঘরে। মধুসূদনের প্রতি বিপ্ৰদাস। তোমাকে জিজ্ঞাসা করি, একে নিয়ে যেতে পারবে সাহস করে? মধুসূদন। পারব। আমি মহারানীকেই খুঁজেছিলুম, পেয়েছি মহারানীকে। আজ আমি বুঝতে পেরেছি। আমি জেলখানার দারোগ নই। বিপ্ৰদাসকে প্ৰণাম করে দাদা, এবার আমাকেও আশীর্বাদ দিয়ে। যবনিকা |ა პ\5)\ტ