পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᏚᎸ ᏬᏅ রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী কান মলা। আমি প্ৰজাপতি আজ লজ্জিত, কন্দৰ্প আজ নিজীবী— তিনি পঞ্চশর নিয়ে যখন আস্ফালন করতে যান তখন তীরগুলো ঠিকরে যায় কোম্পানির কাগজ-নির্মিত বর্মের ”পরে। অতএব উক্ত বিভাগের সনাতনী খাতা থেকে আমাদের নাম কেটে নিয়ে টঙ্কেশ্বরী দেবীর নাম বহাল হােক। সকলে। তথাস্তু। বায়ু। পৃথিবীতে আজকাল পাগলা হাওয়া পলিটিক্সের ঈশান কোণ থেকে সৃষ্টি ছারখার রুক্তি। আমি আজ চন্দ্রলােকে সমস্ত বিরািহণীদের দীর্ঘনিশ্বাস বহন করে ফিরে যেতে ইচ্ছা করি। অশ্বিনীকুমার। সুবিধা হবে না দেব। মর্ত্যের পণ্ডিতেরা ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, চন্দ্ৰ বায়ুর প্রকোপ বৃদ্ধি করেন বটে, কিন্তু স্বয়ং তিনি বায়ুহারা। বায়ু। নাহয় সেখানে গিয়ে আত্মহত্যা করব। ভোলানাথ। (অর্ধনিমীলিত নেত্ৰে) আমার চেয়ে গাঁজার মীেতাত অনেক প্রবল, পৃথিবীতে এমন সর্বনেশে ওস্তাদের অভাব নেই- সেই সব সংস্কারকদের উপর প্রলয়কার্যের ভার দিয়ে আমি গঙ্গাধারাভিষেকে মাথা ঠাণ্ডা করতে পারি। আমার ভূতগুলোর ভার তারাই নিতে পারবেন। চিত্রগুপ্ত। মনঃক্ষোভে দেবগণের অভিযোগে অত্যুক্তি প্ৰকাশ পেয়েছে। যথাযথ তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন বোধ করি। সুরগুরু কোনোদিন সংখ্যাতত্ত্বের আলোচনা করেন নি। সেইজন্যে দেবতাদের গণিত স্বেচ্ছাগণিত। মর্ত্যে দেবগণের অধিকারে কী পরিমাণে খর্বতা ঘটেছে তার নির্ভুল সীমা নির্ণয়ের জন্য স্বপ্নাদেশ দেওয়া হােক কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংখ্যিক প্ৰমাণবিশারদের মাথায়; এ কাজে বৈজ্ঞানিক প্রশান্তি অত্যাবশ্যক। বায়ু। এ প্রস্তাবের সমর্থন করি। দেবতাদের হতাশ হবার কারণ নেই। মানুষের বুদ্ধিতে অকস্মাৎ হাওয়াবদল বার বারই দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষত দুদিনে। দেউলে হবার দিনে মানতের খরচ বেড়ে ওঠে। মানুষের বুদ্ধিতে সব সময় জোয়ার আসে না- একদা তলার পাক বেরিয়ে পড়ে। তখন পাণ্ডার পদপঙ্কের দাম চড়ে যায়, দেবতারাও তার অংশ পান। বৃহস্পতি। আশ্বস্ত হলুম। (সরস্বতীর প্রতি) মুখ মান করবেন না, দেবী, মানুষের আত্মবুদ্ধির উপর শ্রদ্ধা কমবার সঙ্গে সঙ্গেই দেবীর ভোগের বরাদ বাড়তে থাকে। বুদ্ধিতে ভাটার টান প্রবল, ভূমণ্ডলে এমন দেশ আছে। শীতলা ঠাকরুনও সেই ভরসাতেই মন্দির-ত্যাগের আশঙ্কা ছেড়ে দিয়েছেন। ; আশ্বিন, ১৩৪৫