পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR8O এই কান্নার দোল এও সেই দোলপূর্ণিমার দৌল। জীবনের পরম সম্পদ চরম আশা দেখা দিয়ে যে চলে যায়। কিন্তু গেলেও সে যেতে পারে না। তার বিচ্ছেদের আলো জলে স্থলে আকাশে জুলে ওঠে। মন বলতে থাকে আমার বিরহের বীণা তোমাকেই নিবেদন করে দিলুম। এই বীণায় তোমার নন্দনের সুর এনে দাও। সেই নন্দনের সুর যা মর্ত্যের ওপর থেকে আসে- যেখান থেকে অরুণের আলো আসে- যেখান থেকে হঠাৎ নবজীবনের দূত দেখা দেয় মৃত্যুর তোরণ পার হয়ে | রবীন্দ্ৰবীক্ষা এনেছ ওই শিরীষ বকুল আমের মুকুল সাজিখানি হাতে করে। কবে যে সব ফুরিয়ে দেবে, চলে যাবে দিগন্তরে৷ পথিক, তোমায় আছে জানা, করব না গো তোমায় মানা যাবার বেলায় যেয়ো যেয়ে বিজয়মালা মাথায় পরে। তবু তুমি আছ যতক্ষণ অসীম হয়ে ওঠে হিয়ায় তোমারি মিলন। , যখন যাবে তখন প্ৰাণে বিরহ মোর ভরবে গানেদূরের কথা সুরে বাজে সকল বেলা ব্যথায় ভরে | | ও দেখা দিয়ে যে চলে গেল, ও চুপি চুপি কী বলে গেল। যেতে যেতে গো, কাননেতে গো ও কত যে ফুল দলে গেল। মনে মনে কী ভাবে কে জানে, মেতে আছে ও যেন কী গানে, নয়ন হানে আকাশ পানে- চাদের হিয়া গলে গেল। ও পায়ে পায়ে যে বাজায়ে চলে বীণার ধ্বনি তৃণের দলে। কে জানে কারে ভালো কি বাসে, বুঝিতে নারি কঁদে কি হাসে, জানি নে ও কি ফিরিয়া আসে- জানি নে ও কি ছলে গেল। লহাে লাহাে তুলে লহাে নীরব বীণাখনি। তোমার নন্দন নিকুঞ্জ হতে সুর দেহাে তায় আনি ওহে সুন্দর হে সুন্দর ৷ আমি আঁধার বিছায়ে আছি। রাতের আকাশে তোমারি আশ্বাসে। তারায় তারায় জােগাও তোমার আলোক-ভরা বাণী ওহে সুন্দর হে সুন্দর ৷ পাষাণ আমার কঠিন দুখে তোমায় কেঁদে বলে, ‘পরশ দিয়ে সরস করো ভাসাও অশ্রুজিলে, ওহে সুন্দর হে সুন্দর।” শুষ্ক যে এই নগ্ন মরু নিত্য মরে লাজে আমার চিত্ত মাঝে, ওহে সুন্দর হে সুন্দর। Svoc দ্বাদশ সংকলন । q2 (ğM yOsy