পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবিতা সে প্রার্থনা পুরায়েছ হে বঙ্কিম, কালের যে বর এনেছ আপন হাতে নহে তাহা নির্জীব স্থাবর। নব যুগসাহিত্যের উৎস উঠি মন্ত্ৰম্পর্শে তব চিরচলমান স্নোতে জাগাইছে প্ৰাণ অভিনব এ-বঙ্গের চিত্তক্ষেত্রে, চলিতেছে সম্মুখের টানে। নিত্য নব প্রত্যাশায় ফলবান ভবিষ্যৎ পানে। তাই ধ্বনিতেছে তাজি সে বাণীর তরঙ্গ কল্লোলে, বঙ্কিম, তোমার নাম, তব কীর্তি সেই স্রোতে দোলে। বঙ্গভারতীর সাথে মিলায়ে তোমার আয়ু গনি, তাই তব করি জয়ধ্বনি। শনিবারের চিঠি আষাঢ় ১৩৪৫ ২০ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বঙ্গসাহিত্যের রাত্রি স্তব্ধ ছিল তন্দ্রার আবেশে। অখ্যাত জড়ত্বভারে অভিভূত। কী পুণ্য নিমেযে তব শুভ অভু্যদয়ে বিকীরিল প্রদীপ্ত প্রতিভা, প্রথম আশার রশ্মি নিয়ে এল প্রত্যুষের বিভা, বঙ্গভারতীর ভালে পরালো প্রথম জয়টিকা। রুদ্ধভাযা আঁধারের খুলিলে নিবিড় যবনিকা হে বিদ্যাসাগর, পূর্ব দিগন্তের বনে-উপবনে নব উদবোধনগাথা উচ্ছসিল বিস্মিত গগনে। যে বাণী আনিলে বহি নিস্কলুষ তাহা শুভরুচি, সকরুণ মাহাত্ম্যের পুণ গঙ্গাস্নানে তাহা গুচি। ভাষার প্রাঙ্গণে তব আমি করিব তোমারি অতিথি; ভারতীর পূজাতরে চয়ন করেছি আমি গীতি সেই তরুতল হতে যা তোমার প্রসাদসিঞ্চনে। মরুর পাষাণ ভেদি প্রকাশ পেয়েছে শুভক্ষণে। ২৪ ভাদ্র ১৩৪৫ প্রবাসী, কার্তিক ১৩৪৫ ২১ জলধর বাঙালির প্রীতি অৰ্ঘে তব দীৰ্ঘ জীবনের তরী ৱিন্ধ শ্রদ্ধাসুধারস নিঃশেষে লয়েছে পূর্ণ করি।