পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষরক্ষা ᎼᏬ☾ (আপন মনে) আমার শূন্ত হৃদয়ের মতো, ওগো শূন্ত মোজা, অনুপস্থিত কোন দুটি চরণ সদাই করিছ খোজা ? কিন্তু আর তো মিল দেখছি নে, এক আছে ‘মুসলমানের রোজা – মোজাকে বললে দোষ নেই যে ঈদের দিনে প্রতিপদের চাদ । না না, ওতে আমার লেখার ক্লাসিক্যাল গ্রেসটা চলে যাবে। তা ছাড়া দিন খারাপ, হয়তো সামান্য মোজার জন্যে শাস্তিভঙ্গ হতেও পারে— ওটা থাক । নেপথ্যে । হিয়া রোখো । শিবচরণের প্রবেশ শিবচরণ। বেটার তবু হু’শ নেই। দেখো-না, হা করে দাড়িয়ে আছে দেখো-না। যেন থিদে পেয়েছে, এই বাড়ির ষ্টটকাঠগুলো গিলে খাবে। ছোড়ার হল কী ! খাচার পাখির দিকে বেড়াল যেমন তাকিয়ে থাকে তেমনি করে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। হতভাগা কলেজে যাবার নাম করে রোজ বাগবাজারে এসে ঘুর ঘুর করে। ( নিকটে আসিয়া ) বাপু, মেডিকেল কলেজটা কোনদিকে একবার দেখিয়ে দাও দেখি ! গদাই । কী সর্বনাশ ! এ যে বাবা । শিবচরণ। শুনছ ? কালেজ কোন-দিকে ? তোমার অ্যানাটমির নোট কি ঐ দেয়ালের গায়ে লেখা আছে ? তোমার সমস্ত ডাক্তারিশস্ত্র কি ঐ জানলায় গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ? [ গদাই নিরুত্তর মুখে কথা নেই যে ! লক্ষ্মীছাড়া, এই তোর একজামিন ! এইখানে তোর মেডিকেল কলেজ ! গদাই । খেয়েই কলেজে গেলে আমার অম্লখ করে, তাই একটুখানি বেড়িয়ে নিয়ে— শিবচরণ। বাগবাজারে তুমি হাওয়া খেতে এস ? শহরে আর কোথাও বিশুদ্ধ বায়ু নেই ! এ তোমার দাৰ্জিলিং সিমলে পাহাড় । বাগবাজারের হাওয়া খেয়ে খেয়ে আজকাল যে চেহারা বেরিয়েছে, একবার আয়নাতে দেখা হয় কি ? আমি বলি ছোড়াটা এক্জামিনের তাড়াতেই শুকিয়ে যাচ্ছে, তোমাকে যে ভূতে তাড়া করে বাগবাজারে ঘোরাচ্ছে তা তো জানতুম না ! গদাই । আজকাল বেশি পড়তে হয় বলে রোজ খানিকটা করে এক্সেসাইজ করে নিই—