পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S१९ রবীন্দ্র-রচনাবলী সে কথাটা ঠিক নয়। তোমার বাপের সম্পত্তি নিতান্ত সামান্ত ছিল না, আমারই তোমার বিষয় । সেই টানে হয়তো স্বামীও এসে পড়বে। কমল । কাক, তাকে আপনি এ সংবাদ দেবেন না। কথাটা যাতে কেউ টের না পায়, আপনাকে তাই করতে হবে । নিবারণ। কেন বলো দেখি মা ? কমল। একটু কারণ আছে। সমস্তটা ভেবে আপনাকে পরে বলব। নিবারণ। আচ্ছা । [ প্রস্থান ইন্দু। তোর মতলবট কী আমাকে বল তো । কমল। আমি আর-একটা বাড়ি নিয়ে ছদ্মবেশে ওঁর কাছে অন্য স্ত্রীলোক বলে পরিচয় দেব। ইন্দু। সে তো বেশ হবে ভাই ! ওরা ঠিক নিজের স্ত্রীকে ভালোবেসে মুখ পায় না । কিন্তু বরাবর রাখতে পারবি তো ? কমল । বরাবর রাখবার ইচ্ছে তো আমার নেই, বোন— ইন্দু। ফের আবার একদিন স্বামী-স্ত্রী সাজতে হবে নাকি ? কমল। হা, ভাই, যতদিন যবনিকাপতন না হয়। ওই শিবচরণবাবু বোধ হয় আসছেন, চলো পালাই। [ উভয়ের প্রস্থান গদাই ও শিবচরণের প্রবেশ শিবচরণ। দেখ, নিবারণকে আজ শেষ কথা বলব বলেই এখানে এসেছি। এখন তোর মনের কথাটা স্পষ্ট করেই বল। গদাই । আমি তো সব কথাই স্পষ্ট করেই বলেছি। বিয়ে করবার কথায় এখন মন দিতেই পারছি নে । শিবচরণ। এই বুড়ে বয়সে তুই যে একটা সামান্য বিষয়ে আমাকে এত দুঃখ দিবি, তা কে জানত ! গদাই । বাবা, এটা কি সামান্য বিষয় হল ! শিবচরণ। আরে বাপু, সামান্য না তো কী ? বিয়ে করা বৈ তো নয়! রাস্তার মুটে-মজুরগুলোও যে বিয়ে করছে। ওতে তো খুব বেশি বুদ্ধি খরচ করতে হয় না, বরঞ্চ কিছু টাকা খরচ আছে, তা সেও বাপমায়ে জোগায়। তুই এমন বুদ্ধিমান ছেলে, এতগুলো পাস করে শেষকালে এইখানে এসে ঠেকল !