8bペ রবীন্দ্র-রচনাবলী রকম ব্যয় হয় যে সুদীর্ঘকাল লাগে তার আয়োজনে— ষম আপন কাজ সংক্ষেপে ও সস্তায় সারেন কিন্তু নিয়ম চলে অতি লম্বা ও দুমুল্য চালে। এখানে অতীত কালের অস্ত্যেষ্টিক্রিয়া চলেছে বহুকাল ধরে, বর্তমানকালকে আপন সর্বস্ব দিতে হচ্ছে তার ব্যয় বহন করবার জন্তে । এখানে এসে বারবার আমার এই কথা মনে হয়েছে যে, অতীতকাল যত বড়ো কালই হোক, নিজের সম্বন্ধে বর্তমানকালের একটা স্পধা থাকা উচিত ; মনে থাকা উচিত, তার মধ্যে জয় করবার শক্তি আছে। এই ভাবটাকে আমি একটি ছোটো কবিতায় লিখেছি, সেটা এইখানে তুলে দিয়ে এই দীর্ঘ পত্র শেষ করি। নন্দগোপাল বুক ফুলিয়ে এসে বললে আমায় হেসে, “আমার সঙ্গে লড়াই করে কথখনো কি পার। বারে বরেই হার ।” আমি বললেম, “তাই বই কি ! মিথ্যে তোমার বড়াই, হোক দেখি তো লড়াই ।” *আচ্ছা, তবে দেখাই তোমায়” এই বলে সে যেমনি টানলে হাত দাদামশায় তখ খনি চিৎপাত। সবাইকে সে আনলে ডেকে, চেচিয়ে নন্দ করলে বাড়ি মাত ॥ বারে বারে শুধায় আমায়, “বলো তোমার হার হয়েছে না কি ৷” আমি কইলেম, “বলতে হবে তা কি । ধুলোর যখন নিলেম শরণ প্রমাণ তখন রইল কি আর বাকি। এই কথা কি জান— আমার কাছে, নন্দগোপাল, যখনই হার মান, আমারই সেই হার, লজ্জা সে আমার । ধুলোয় যেদিন পড়ব, যেন এই জানি নিশ্চিত, তোমারই শেষ জিত । ইতি ৩০শে আগস্ট ১৯২৭ কারেম আসন । বালি৯ ১ খ্ৰীমতী প্রতিমা দেবীকে লিখিত ।