পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪ ছড়ার ছবি ওইখানেতে বালির ভাঙা, মাঠ করছে ধু ধু, ঢিবির পরে বসে আছে গায়ের মোড়ল বুধু। সামলে মাঠে ছাগল চরছে ক’টা— শুকনে জমি, লেইকো ঘাসের ঘট । কী যে ওরা পাচ্ছে খেতে ওরাই সেটা জানে, ছাগল ব’লেই বেঁচে অাছে প্রাণে । আকাশে আজ হিমের আভাস, ফ্যাকাশে তার নীল, অনেক দূরে যাচ্ছে উড়ে চিল । হেমস্তের এই রোদস্তুরটা লাগছে অতি মিঠে, ছোটো নাতি মোগলুট। তার জড়িয়ে আছে পিঠে । স্পর্শপুলক লাগছে দেহে, মনে লাগছে ভয়— বেঁচে থাকলে হয় । গুটি তিনটি মরে শেষে ওইটি সাধের নাতি, রাত্রিদিনের সাথি ! গোরুর গাড়ির ব্যাবসা বুধুর চলছে হেসে-খেলেই, নাড়ি ছেড়ে এক পয়সা খরচ করতে গেলেই । কৃপণ ব’লে গ্রামে গ্রামে বুখুর নিন্দে রটে, সকালে কেউ নাম করে না উপোস পাছে ঘটে । ওর যে কৃপণতা সে তো ঢেলে দেবার তরে, যত কিছু জমাচ্ছে সব মোগলু নাতির পরে। পয়সাটা তার বুকের রক্ত, কারণটা তার ওই— এক পয়সা আর কারো নয় ওই ছেলেটার বই । না খেয়ে, না পরে, নিজের শোষণ ক’রে প্রাণ যেটুকু রয় সেইটুকু ওর প্রতি দিনের জান । দেবৃত পাছে ঈর্ষাভরে নেয় কেড়ে মোগলুকে, অঁাকড়ে রাখে বুকে । এখনো তাই নাম দেয় নি, ভাক নামেতেই ভাকে, নাম ভাড়িয়ে ফাকি দেবে নিষ্ঠুর দেবৃতাকে । ዓፃ