পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী সামরু বলে, “তোমার ঘরে কী ধন আছে কত আমাদের এই স্বধিয়াকে কিলে নেবার মতো । ও ষে আমার মানিক, আমার সাত রাজার ওই ধন, আর যা আমার যায় সবই যাক, ছুঃখিত নয় মন । মৃত্যুপারের থেকেই ও ষে ফিরেছে মোর কাছে, এমন বন্ধু তিন ভুবনে আর কি আমার আছে।” বাপের কানে কি বললে সেই জুনিৰ্চাদের ছেলে, জেদ বেড়ে তার গেল বুঝি যেমনি বাধা পেলে । শেঠজি বলে মাথা নেড়ে, “দুই চারিমাস যেতেই ওই স্থধিয়ার গতি হবে আমার গোয়ালেতেই ৷” কালোয় সাদায় মিশেtল বরন, চিকন নধর দেহ, সর্ব অঙ্গে ব্যাপ্ত যেন রাশীকৃত স্নেহ । আকাল এখন, সামরু নিজে দুইবেলা আধ-পেটা ; স্থধিয়াকে খাওয়ালে চাই যখনি পায় যেটা । দিনের কাজের অবসানে গোয়ালঘরে ঢুকে ব’কে যায় সে গাভীর কালে যা আসে তার মুখে । কারো পরে রাগ সে জানায়, কখনো সাবধানে গোপন খবর থাকলে কিছু জালায় কালে কশনে । স্বধিয়া সব দাড়িয়ে শোলে কালটা খাড়া ক’রে, বুঝি কেবল ধ্বনির স্বখে মন ওঠে তার ভরে । সামরু যখন ছোটো ছিল পালোয়ণনের পেশা ইচ্ছা করেছিল নিতে, ওই ছিল তার নেশা । খবর পেল, নবাববাড়ি কুস্তিগিরের দল পালা দেবে— সামরু শুনে অসহ চঞ্চল । বাপকে ব’লে গেল ছেলে, “কথা দিচ্ছি শোনো, এক হস্তার বেশি দেরি হবে না কখ খোনে ৷” ফিরে এসে দেখতে পেলে, ক্ষধিয়া তার গাই শেঠ নিয়েছে ছলে-বলে, গোয়ালঘরে নাই ।