পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছড়ার ছবি যেমনি শোনা অমনি ছুটল, ভোজালি তার হাতে, দ্বনিৰ্চাদের গদি যেথায় নাজির-মহল্লাতে । “কী রে সামর, ব্যাপারটা কী" শেঠজি শুধায় তাকে । সামরু বলে, “ফিরিয়ে নিতে এলুম স্থধিয়াকে ৷” শেঠ বললে, "পাগল নাকি, ফিরিয়ে দেব তোরে, পৰ্বণ্ড ওকে নিয়ে এলুম ডিক্রিজারি করে।” “সুধিয়া রে” “স্থধিয়া রে” সামরু দিল হাক, পাড়ার আকাশ পেরিয়ে গেল বজমন্দ্র ডাক । চেনা স্বরের হাম্বা ধ্বনি কোথায় জেগে উঠে, দড়ি ছিড়ে সুধিয়া ওই হঠাৎ এল ছুটে । ছু চোখ দিয়ে করছে বারি, অঙ্গটি তার রোগা, অন্নপানে দেয় নি সে মুখ, অনশনে-ভোগা । সামর ধরল জড়িয়ে গলা, বললে, “নাই রে ভয়, আমি থাকতে দেখব এখন কে তোরে আর লয় – তোমার টাকায় দুনিয়া কেনা, শেঠ দ্বনিৰ্চাদ, তবু এই স্বধিয়া একলা নিজের, আর কারো নয় কভু । আপন ইচ্ছামতে যদি তোমার ঘরে থাকে তবে আমি এই মুহূর্তে রেখে যাব তাকে ৷” চোখ পাকিয়ে কয় জুনিটাদ, “পণ্ডর আবার ইচ্ছে ! গয়লা তুমি, তোমার কাছে কে উপদেশ নিচ্ছে । গোল কর তো ডাকব পুলিস।" সামরু বললে, “ডেকে । ফালি আমি ভয় করি নে, এইটে মনে রেখো। । দশবছরের জেল খাটব, ফিরব তো তার পর, সেই কথাটাই ভেবো বলে, আমি চললেম ঘর।” শান্তিনিকেতন আষাঢ় ১৩৪৪