পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপর্তী S86. অভিযোগকারীকে আমিই তোমার কাছে নিয়ে গেছি। মন্ত্রী সাহস করে নি। সেদিন দেখি নি কি বিচারকালে ক্ষণে ক্ষণে তোমার ভ্ৰকুটি । জগু তোমার কতবার উচ্চত হয়েও দুর্বল দ্বিধায় নিরস্ত হয়েছে সে কথা স্বীকার করবে না ? বিক্রম । সাবধান ! আমি দুর্বল ! কিসের ভয়ে দুর্বল ! দেবদত্ত । শিলাদিত্যকে যে-শক্তি নিজে দিয়েছ আজ তার প্রতিরোধ করা তোমার নিজের পক্ষেও দুঃসাধ্য— এই কারণেই দ্বিধা । তুমি ওদের ভয় করতে আরম্ভ করেছ— আমাদের ভয় সেইখানেই । বিক্রম । অসহ তোমার স্পৰ্ধা ! অকুতাপের দিন তোমার আসন্ন । স্থমিত্রা । আধপুত্র, আমাদের দণ্ড দেওয়া সহজ কথা— সেজন্তে রাজশক্তির প্রয়োজন হবে না । কিন্তু শিলাদিত্যের বিচার আজই করা চাই । বিক্রম । অভিযোগ যার সে কই ? সুমিত্রা । সে আমি । বিক্রম । তুমি ? স্বমিত্রা । যে হতভাগা এসেছিল তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রম । নিজের মিথ্যার ভয়ে সে পালিয়েছে। স্বমিত্রা । মহারাজ, তুমি নিশ্চয় জান কে তাকে হরণ করেছে। বিক্রম। মহারানী, অন্ধ দয়া আর অস্পষ্ট অকুমানের দ্বারা বিচার হয় না । রত্নেশ্বরকে নিয়ে নরেশের প্রবেশ নরেশ । শিলাদিত্যের লোক একে বলপূর্বক ধরে নিয়ে যাচ্ছিল রাজদ্বারের সম্মুখ দিয়ে। আমার নিষেধ শুনলে না। তলোয়ার খুলতে হল রাজা আছেন এই কথা এদের স্মরণ করিয়ে দিতে । বিক্রম । কেন ওকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল । নরেশ । বললে শিলাদিত্যের আদেশ । সে আদেশের উপরে তোমার আদেশ কী, সেইটে শোনবার জন্তে অপেক্ষা করছি। রত্নেশ্বর। মহারানী, আমার রক্ষা নেই সে আমি জানি, কিন্তু বিচার চাই— সে বিচার অাজই যেন হয়, তোমার সামনেই যেন হয়, দোহাই তোমার। স্থমিত্র। মূঢ়, ওই যে মহারাজ আছেন, ওঁকে জানাও তোমার অভিযোগ । রত্নেশ্বর। মহারাজ, মর্মঘাতী দুঃখ আমাদের— সে দুঃখ বাধা মানবে না, বিলম্ব সইৰে না, মৃত্যুযন্ত্রণার চেয়ে সে প্রবল ।