পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপর্তী قيقب S8ፃ কর্তব্যবুদ্ধি পলি– তোমরা বিচার করবার স্পৰ্ধ কর! সময় আসবে, বিচার করব, কিন্তু তোমাদের ওই কারা শুনে নয়। মহারানী, তুমি কোথায় চলেছ । যেয়ো না, থামো | স্বমিত্র । এমন আদেশ কোরো না। চলে রাজকুমার, ওই লতাবিতানে, মন্ত্রী কী সংবাদ পাঠিয়েছেন শুনতে চাই । বিক্রম। মহারানী, তোমার এই প্রচ্ছন্ন অবজ্ঞLআমার কর্তব্যকে আরো অসাধ্য করে তুলছে। শুনে যাও— আমি আদেশ করছি। ফিরে এলো । সুমিত্রা। কী, বলো । বিক্রম। তুমি আমাকে চিনতে পারলে না— তোমার হৃদয় নেই, নারী ! শংকরের তাগুবকে উপেক্ষা করতে পারি কি । সে তো অপসরার মৃত্য নয় । আমার প্রেম, এ প্রকাগু, এ প্রচণ্ড, এতে আছে আমার শৌর্য— আমার রাজপ্রতাপের চেয়ে ’এ ছোটো নয়। তুমি যদি এর মহিমাকে স্বীকার করতে পারতে তা হলে সব সহজ হত। ধর্মশাস্ত্র পড়েছ তুমি, ধর্মভীরু— কর্মদালের কাধের উপর কর্তব্যের বোঝা চাপানোকেই মহৎ ব’লে গণ্য করা তোমার গুরুর শিক্ষা । ভুলে যাও, তোমার ওই কানে মন্ত্রগুলো । ষে আদিশক্তির বস্তার উপরে ফেনিয়ে চলেছে স্বষ্টির বুদবুদ্ধ, সেই শক্তির বিপুল তরঙ্গ আমার প্রেমে— তাকে দেখো, তাকে প্রণাম করে, অর তোমার কর্ম অকর্ম দ্বিধাদ্বন্দ্ব সমস্ত ভাসিয়ে দাও, একেই বলে মুক্তি, একেই প্ৰলয়, এতেই আনে জীবনে যুগান্তর । সুমিত্রা । সাহস নেই মহারাজ, সাহস নেই ! তোমার প্রেম তোমার প্রেমের পাত্রকে অনেক দূরে ছাড়িয়ে গেছে— আমি তার কাছে অত্যন্ত ছোটো । তোমার চিত্তসমূত্রে যে তুফান উঠেছে তাতে পাড়ি দেবার মতো আমার এ তরী নয়— উন্মত্ত হয়ে যদি ভাসিয়ে দিই তবে মুহূর্তে এ যাবে তলিয়ে। আমার স্থিতি তোমার প্রজাদের কল্যাশলক্ষ্মীর দ্বারে— সেখানকার ধূলির পরেও যদি আসন দিতে, আমার লজ্জা দূর হত । তোমার নিজের তরঙ্গগর্জনে তোমার কর্ণ বধির, কেমন করে জানবে কী নিদারুণ দুঃখ তোমার চার দিকে । কত মৰ্মভেদী কান্নার প্রতিধ্বনি দিনরাত্রি আমার চিত্তকুহরে ক্ষুদ্ধ হয়ে বেড়াচ্ছে তোমাকে তা বোঝাবার আশা ছেড়ে দিয়েছি। যখন চার দিকেই সবাই বঞ্চিত তখন আমাকে তুমি যত বড়ো সম্পাই দাও, তাতে আমার রুচি হয় না। চলে রাজকুমার, মন্ত্রী কী আবেদন করছেন আমাকে বলবে চলো । کي বিক্রম । শোনো নরেশ, কী সংবাদ এনেছ বলে আমাকে ।