পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖԳօ রবীন্দ্র-রচনাবলী চআসেন। কিছু ভয় নেই, বংগ, শুধু বিশ্বাসের উপর ভর করে আসি নি। ওদের যদি অপঘাতমুতু্যর ইচ্ছা থাকে নিরাশ করব না। কুমারসেন। প্রণাম পিতৃব্যদেব। আমার অভিষেকমুহূর্ত তোমার সমাগমে সার্থক হল । আমাকে আশীর্বাদ করো। চন্দ্রসেন। সে পরে হবে । সময় একটুও নেই। কেন এসেছি শোনো । সহল। জালন্ধররাজ সসৈন্তে কাশ্মীরে উপস্থিত । কুমারলেন । শুনেছি সে সংবাদ । অভিষেকের কাজ সত্বর সমাধা করব । চন্দ্রসেন। থাকু এখন অভিষেক । অবিলম্বে চলো তার কাছে আত্মসমর্পণ করবে । কুমারসেন। আত্মসমর্পণ ! যুদ্ধ নয় ? চন্দ্ৰসেন । সৈন্ত কোথায় তোমার। কুমারসেন। কেন । রাজধানীতে সৈন্তের অভাব নেই। চন্দ্রলেন । সে তো এখনো তোমার নয় । কুমারসেন । কিন্তু কাশ্মীরের তো বটে ! চন্দ্রসেন । বিক্রম তো কাশ্মীর চান না, তোমাকেই চান । কুমারলেন । আমার মান-অপমান কী কাশ্মীরের নয়। চন্দ্রসেন। কী বল তুমি ! এ তে সামান্ত আত্মীয়কলহ। দাও তার কাছে ধরা, চাও তার স্নেহ ও ক্ষমা, হাসিমুখে সমস্ত নিম্পত্তি হয়ে যাবে। কুমারলেন। খুড়োমহারাজ, তর্ক করবার সময় নেই, শেষবার জিজ্ঞাসা করি— রাজধানী থেকে সৈন্ত পাব না ? চন্দ্রলেন। রাজধানী ! বিদ্রুপ করছ? শুনেছি ওই আখরোটবনেই কাশ্মীরের রাজধানী। তোমার আদেশ এইখান থেকেই ঘোষণা কোরো । আমাকে তো কোনো প্রয়োজন নেই। আমি বিদায় হই । [ প্রস্থান সকলে । ধিক্ ধিক্ । নিপাত যাও । কোটি জন্ম তোমার নরকবাস হোক । সিংহাসনের কীট, সিংহাসনকে জীৰ্ণ করে তার ধূলির মধ্যে তোমার বিলুপ্তি ঘটুক । কুমারসেন । স্তব্ধ হও । শোনো । জালন্ধর কাশ্মীর আক্রমণে এসেছেন, আমাকে একলা লড়তে হবে । সকলে । মহারাজ, স্তায় তোমার পক্ষে, ধর্ম তোমার পক্ষে, সমস্ত কাশ্মীরের হৃদয় তোমার পক্ষে । জয় মহারাজা কুমারসেনের জয় ! ধিক্ ধিক্ চন্দ্রসেনকে শত শত শত ধিক্ ।