পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\©ჯyo o রবীন্দ্র-রচনাবলী বিষমমাত্রামুলক ছন্দ কিছু কিছু চালিয়েছি, কিন্তু বিষমমাত্রার ঘনঘন পুনরাবৃত্তির দ্বারা তারও একটা সম্মিতি রক্ষণ হয় । শিমূল রাঙা রঙে চোখেরে দিল ভরে । নাকট হেসে বলে, হায় রে যাই মরে । নাকের মতে, গুণ কেবলি আছে ভ্রাণে, রূপ যে রঙ খোজে নাকটা তা কি জানে । এখানে বিষমমাত্রার পদগুলি জোড়ে-জোড়ে এসে চলনের অসমানত ঘুচিয়ে দিয়েছে । কিন্তু, সংস্কৃত ভাষায় বিষমমাত্রার বিস্তার আরো অনেক বড়ো । এই সংস্কৃত ছন্দের দীর্ঘত্বস্ব স্বরকে সমান করে নিয়ে কেবলমাত্র মাত্রা মিলিয়ে ছন্দ রচনা বাংলায় দেখেছি, সে বহুকাল পূর্বে ‘স্বপ্নপ্রয়াণ’এ। লজ্জা বলিল, “হবে কি লো তবে, কতদিন পরান রবে অমন করি । হইয়ে জলহীন যথা মীন রহিবি ওলো কতদিন মরমে মরি ” এর প্রত্যেক ভাগে মাত্ৰাসংখ্যা স্বতন্ত্র । সংস্কৃত ছন্দে বিবিধ মাত্রার এই গতিবৈচিত্র্য যা সম্মিতি উপেক্ষা করেও ভঙ্গিলীলা বঁচিয়ে চলে, বাংলায় তার অনুকৃতি এখনো যথেষ্ট প্রচলিত হয় নি। নূতন ছন্দ বাংলায় স্বষ্টি করবার শখ যাদের প্রবল, এই পথে তারা অনেক নূতনত্বের সন্ধান পাবেন। তবু বলে রাখি, তাতে র্তারা সংস্কৃত ছন্দের মোট আয়তনটা পাবেন, তার ধ্বনিতরঙ্গ পাবেন না। মন্দাক্রাস্তার মাত্রা-গোনা একটা বাংলা ছন্দের নমুনা দেওয়া বাক—