পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sss . রবীন্দ্র-রচনাবলী আবার বেড়ে ওঠে ক্রমে’র মাত্রার অসাম্য ঘটেছে এই তোমার মত। ‘ক্রমে শব্দটার ‘ক্র'র উপর যদি যথোচিত বোক দণও তা হলে হিসাবের গোল থাকে না । ‘বেড়ে ওঠেক্রমে’— বস্তুত সংস্কৃত ছন্দের নিয়মে 'ক্র’ পরে থাকাতে ওঠে'র ‘এ’ স্বরবর্ণেমাত্রা বেড়ে ওঠা উচিত। তুমি বলতে পার, আমরা সাধারণত শব্দের প্রথম বর্ণস্থিত র-ফলাকে দুই মাত্রা দিতে কৃপণতা করি। “আক্রমণ শব্দের ‘ক্র’কে তার প্রাপ্য মাত্রা দিই, কিন্তু ওঠে ক্রমে’র ‘ক্র হ্রস্বমাত্রায় খর্ব করে থাকি। আমি সুযোগ বুঝে বিকল্পে দুইরকম নিয়মই চালাই। ২ । ভক্ত। সেথায় । খোলো দ্বা। ••র। এইরকম ভাগে কোনো দোষ নেই। কিন্তু, তুমি যে ভাগ করেছিলে । র•• । এটা চলে না ; যেহেতু ‘র’ হসন্ত বর্ণ, ওর পরে স্বরবর্ণ নেই, অতএব টানব কণকে । ৩ । ‘জনগণ গান যখন লিখেছিলেম তখন ‘মারাঠা’ বানান করি নি। মরাঠিরাও প্রথমবর্ণে আকার দেয় না। আমার ছিল ‘মরাঠা । তার পরে যারা শোধন করেছেন র্তারাই নিরাকারকে সাকার করে তুলেছেন, আমার চোখে পড়ে নি । ৪ । ‘জাগিয়ে’ ও ‘রটিয়ে’ শব্দের "গিয়ে’ ও ‘টিয়ে প্রাকৃত-বাংলার মতে এক মাত্রাই । আমি যদি পরিবর্তন করে থাকি সেটাকে স্বীকার করবার প্রয়োজন নেই। ஆசி ১০ নভেম্বর ১৯২৯ "L তুমি যে স্নান’ শব্দটিকে হসন্তভাবে উচ্চারণ কর এ আমার কাছে নতুন লাগল। আমি কখনোই 'স্নান বলি নে । প্রাকৃত-বাংলার যে-সব শব্দ অতিপ্রচলিত তাদেরই উচ্চারণে এইরকম স্বরলুপ্তি সহ করা চলে । ‘মাল’ শব্দটা সে-জাতের নয় এবং ওটা অতি স্বন্দর শব্দ, ওকে বিনা দোষে জরিমানা করে ওর স্বরহরণ কোরো না, তোমার কাছে এই আমার দরবার | যতি বলতে বোঝায় বিরাম । ছন্দ জিনিসটাই হচ্ছে আবৃত্তিকে বিরামের বিশেষ বিধির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করা । ললিত ল ৷ বঙ্গ ল । তা পরি। শীলন। প্রত্যেক চার মাত্রার পরে বিরাম । বদলি যদি ৷ কিঞ্চিদপি । পাচ-পাচ মাত্রার শেষে বিরাম । তুমি যদি লেখ বদসি যদ্যপি তা হলে এই ছন্দে যতির যে পঞ্চায়তি বিধান আছে তা রক্ষা হবে না। এখানে যভিভঙ্গ ছন্দোভঙ্গ একই কথা ।