পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७२७ ।। রবীন্দ্র-রচনাবলী সেবার অষ্টাঙ্গগুদ্ধি উপবাসে তৃতীয় রাত্রে বালক কুশলশীল জল জল’ করে পিপাসায় প্রাণত্যাগ করলে কিন্তু তবু তার মুখে যখন এক বিন্দু জল দেওয়া গেল না তখন তে৷ আপনি নীরব হয়ে ছিলেন। তুচ্ছ মানুষের প্রাণ আজ আছে কাল নেই, কিন্তু সনাতন ধর্মবিধি তো চিরকালের । সুভদ্রকে লইয়া পঞ্চকের প্রবেশ পঞ্চক । ভয় নেই স্বভদ্র, তোর কোনো ভয় নেই – এই শিশুটিকে অভয় দাও প্ৰভু । আচার্য। বৎস, তুমি কোনো পাপ কর নি বৎস, যারা বিনা অপরাধে তোমাকে হাজার হাজার বৎসর ধরে মুখ বিকৃত করে ভয় দেখাচ্ছে পাপ তাদেরই। এসে পঞ্চক। [ সুভদ্রকে কোলে লইয়া পঞ্চকের সঙ্গে প্রস্থান উপাধ্যায়। এ কী হল উপাচার্যমশায় ! মহাপঞ্চক। আমরা অশুচি হয়ে রইলুম, আমাদের যাগযজ্ঞ ব্ৰত-উপবাস সমস্তই পণ্ড হতে থাকল, এ তো সহ করা শক্ত । উপাধ্যায়। এ সহ করা চলবেই না । আচার্য কি শেষে আমাদের স্নেচ্ছের সঙ্গে সমান করে দিতে চান ! মহাপঞ্চক। উনি আজ সুভদ্রকে বাচাতে গিয়ে সনাতনধর্মকে বিনাশ করবেন ! এ কী রকম বুদ্ধিবিকার ওঁর ঘটল । এ অবস্থায় ওঁকে আচার্য বলে গণ্য করাই চলবে না । উপাচার্য। সে কি হয় ! যিনি একবার আচার্য হয়েছেন তাকে কি আমাদের ইচ্ছামত— মহাপঞ্চক । উপাচার্যমশায়, আপনাকে ও আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে হবে। উপাচার্য। নূতন কিছুতে যোগ দেবার বয়স আমার নয় উপাধ্যায়। আজ বিপদের সময় বয়স-বিচার ! উপাচার্য। ধর্মকে বাচাবার জন্তে যা করবার করো। আমাকে দাড়াতে হবে আচার্যদেবের পাশে। আমরা একসঙ্গে এসেছিলুম, যদি বিদায় হবার দিন এসে থাকে তবে একসঙ্গেই বাহির হয়ে যাব । মহাপঞ্চক । কিন্তু একটা কথা চিস্ত করে দেখবেন । আচার্যদেবের অভাবে আপনারই আচার্য হবার অধিকার। উপাচার্য। মহাপঞ্চক, সেই প্রলোভনে আমি আচার্যদেবের বিরুদ্ধে দাড়াব ?