পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন \O3S পঞ্চক। ঠাকুর, আমাকে কিন্তু তুমি বড়ো অস্থির করে তুলেছ। এক-এক সময় ভয় হয় বুঝি কোনোদিন আর মন শাস্ত হবে না। দাদাঠাকুর। আমিই কি স্থির আছি ভাই ? অামার মধ্যে ঢেউ উঠেছে বলেই তোমারও মধ্যে ঢেউ তুলছি। পঞ্চক। কিন্তু তবে যে তোমার ঐ শোণপাংশুরা বলে তোমার কাছে তারা খুব শাস্তি পায়, কই, শাস্তি কোথায় ! আমি তো দেখি নে । দাদাঠাকুর। ওদের যে শাস্তি চাই। নইলে কেবলই কাজের ঘর্ষণে ওদের কাজের মধ্যেই দাবানল লেগে যেত, ওদের পাশে কেউ দাড়াতে পারত না । পঞ্চক। তোমাকে দেখে ওরা শাস্তি পায় ? দাদাঠাকুর। এই পাগল যে পাগলও হয়েছে শাস্তিও পেয়েছে। তাই সে কাউকে খ্যাপায়, কাউকে বাধে। পূর্ণিমার চাদ সাগরকে উতলা করে যে মন্ত্রে, সেই মন্ত্রেই পৃথিবীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখে। পঞ্চক। ঢেউ তোলো ঠাকুর, ঢেউ তোলো, কুল ছাপিয়ে যেতে চাই। আমি তোমায় সত্যি বলছি আমার মন খেপেছে, কেবল জোর পাচ্ছি নে— তাই দাদাঠাকুর, মন কেবল তোমার কাছে আসতে চায়– তুমি জোর দাও– তুমি জোর দাও– তুমি আর দাড়াতে দিয়ে না। গান আমি কারে ডাকি গো আমার বঁাধন দাও গো টুটে । আমি হাত বাড়িয়ে আছি আমায় লও কেড়ে লও লুটে । তুমি ডাকো এমনি ডাকে যেন লজ্জা ভয় না থাকে, যেন সব ফেলে যাই, সব ঠেলে যাই, যাই ধেয়ে যাই ছুটে । আমি স্বপন দিয়ে বাধা, কেবল ঘুমের ঘোরের বাধা, সে যে জড়িয়ে অাছে প্রাণের কাছে মুদিয়ে আঁখিপুটে ;