পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডাকঘর 8 e X অমল। ফকির, রাজা কি রাগ করবে ? ঠাকুরদা। অমনি বললেই হল! রাগ করবে ! কেমন রাগ করে দেখি-না। আমার মতো ফকির আর তোমার মতো ছেলের উপর রাগ ক’রে সে কেমন রাজাগিরি ফলায় তা দেখা যাবে। অমল। দেখে ফকির, আজ সকালবেলা থেকে আমার চোখের উপর থেকেথেকে অন্ধকার হয়ে আসছে ; মনে হচ্ছে সব যেন স্বপ্ন । একেবারে চুপ করে থাকতে ইচ্ছে করছে। কথা কইতে আর ইচ্ছে করছে না। রাজার চিঠি কি আসবে না ? এখনই এই ঘর যদি সব মিলিয়ে যায়— যদি– ঠাকুরদা । ( অমলকে বাতাস করিতে করিতে ) আসবে, চিঠি আজই আসবে। কবিরাজের প্রবেশ কবিরাজ। আজ কেমন ঠেকছে ? অমল। কবিরাজমশায়, আজ খুব ভালো বোধ হচ্ছে— মনে হচ্ছে ষেন সব বেদন চলে গেছে । কবিরাজ । ( জনাস্তিকে মাধব দত্তের প্রতি ) ঐ হাসিটি তো ভালো ঠেকছে না। ঐ-যে বলছে খুব ভালো বোধ হচ্ছে ঐটেই হল খারাপ লক্ষণ। আমাদের চক্ৰধর দত্ত বলছেন— মাধব দত্ত। দোহাই কবিরাজমশায়, চক্ৰধরদত্তের কথা রেখে দিন। এখন বলুন ব্যাপারখানা কী । কবিরাজ। বোধ হচ্ছে, আর ধরে রাখা যাবে না। আমি তো নিষেধ করে গিয়েছিলুম কিন্তু বোধ হচ্ছে বাইরের হাওয়া লেগেছে । মাধব দত্ত। না কবিরাজমশায়, আমি ওকে খুব করেই চারি দিক থেকে আগলে সামলে রেখেছি। ওকে বাইরে যেতে দিই নে— দরজা তো প্রায়ই বন্ধই রাখি । কবিরাজ। হঠাৎ আজ একটা কেমন হাওয়া দিয়েছে— আমি দেখে এলুম, তোমাদের সদর-দরজার ভিতর দিয়ে হু হু করে হাওয়া বইছে । ওটা একেবারেই ভালো নয়। ও-দরজাটা বেশ ভালো করে তালাচাবি-বন্ধ করে দাও । না-হয় দিন দুই-তিন তোমাদের এখানে লোক-আনাগোনা বন্ধই থাকৃ-না। যদি কেউ এসে পড়ে খিড়কি-দরজা আছে। ঐ-ষে জানলা দিয়ে সূর্যাস্তের আভাটা আসছে, ওটাও বন্ধ করে দাও, ওতে রোগীকে বড়ো জাগিয়ে রেখে দেয় । মাধব দত্ত। অমল চোখ বুজে রয়েছে, বোধ হয় ঘুমোচ্ছে। ওর মুখ দেখে মনে 정~》》