পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8९२ রবীন্দ্র-রচনাবলী যথেষ্ট হল। নালুবাৰু থিয়েটারের মকল করে সবাইকে খুব হাসালেন, শৰ্মিলাও সে হাসিতে যোগ দিলে। শশাঙ্ক-বিরহিত শশাঙ্কের জন্মদিন সাষ্টাঙ্গ প্ৰণিপাত করলে শশাঙ্ক-অধিষ্ঠিত বিজনেসের কাছে । * দুঃখ যথেষ্ট হল, তৰু শৰ্মিলার মনও দূর থেকে প্ৰণিপাত করলে শশাঙ্কের এই ধাবমান কাজের রথের ধ্বজাটাকে । ওর কাছে সেই দুরধিগম্য কাজ, যা কারে খাতির করে না, স্ত্রীর মিনতিকে না, বন্ধুর নিমন্ত্রণকে না, নিজের আরামকে না । এই কাজের প্রতি শ্রদ্ধা দ্বারা পুরুষমানুষ নিজেকে শ্রদ্ধা করে, এ তার আপন শক্তির কাছে আপনাকে নিবেদন । শৰ্মিলা ঘরকন্নার প্রাত্যহিক কর্মধারার পারে দাড়িয়ে সসন্ত্রমে চেয়ে দেখে তার পরপারে শশাঙ্কের কাজ। বহুব্যাপক তার সত্তা, ঘরের সীমানা ছাড়িয়ে চলে যায় সে দূরদেশে, দূর সমুদ্রের পারে, জানা-অজানা কত লোককে টেনে নিয়ে আসে আপন শাসনজালে। নিজের অদৃষ্টের সঙ্গে পুরুষের প্রতিদিনের সংগ্রাম ; তারই বন্ধুর যাত্রাপথে মেয়েদের কোমল বাহু-বন্ধন যদি বাধা ঘটাতে আসে তবে পুরুষ তাকে নির্মম বেগে ছিন্ন করে যাবে বৈকি। এই নির্মমতাকে শমিলা ভক্তির সঙ্গেই মেনে নিলে । মাঝে মাঝে থাকতে পারে না, যেখানে অধিকার নেই হৃদয়ের টানে সেখানেও নিয়ে আসে তার সকরুণ উৎকণ্ঠা, আঘাত পায়, সে আঘাতকে প্রাপ্য গণ্য করেই ব্যথিতমনে পথ ছেড়ে দিয়ে ফিরে আসে। দেবতাকে বলে দৃষ্টি রেখো, যেখানে তার নিজের গতিবিধি অবরুদ্ধ।