পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tror রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী বছর তিনেক অনাবৃষ্টি, এল মাৰন্তরে ; শ্ৰাবণ মাসে শোণিনীতে বান এল তার পর । ঘুলিয়ে ঘুলিয়ে পাকিয়ে পাকিয়ে গৰ্জি দুটিল ধারা, ধারণী চায় শূন্য-পানে সীমার চিহ্নহারা । ভেসে চলল গোরু বাছুর, টান লাগিল গাছে ; মানুষে আর সাপে মিলে শাখা আঁকড়ে আছে । বন্যা যখন নেমে গোল, বৃষ্টি গেল থামিআকাশ জুড়ে দৈত্য-দেবের সুচল সে পাগলামি । শিউনন্দন দাড়ালো তার শূন্য ভিটেয় এসেতিনটে শিশুর ঠিকানা নেই, স্ত্রী গেছে তার ভেসে । চুপ করে সে রইল বসে, বুদ্ধি পায় না খুজি । মনে হল, সব কথা তার হারিয়ে গেল বুঝি । ছেলেটা তার ভীষণ জোয়ান, সামরিক বলে তাকে ; এক-গলা এই জলে-ডোবা সকল পাড়াটাকে মথন করে ফিরে ফিরে তিনটে গোরু নিয়ে ঘরে এসে দেখলে, দু হাত চোখে ঢাকা দিয়ে ইষ্টদেবকে স্মরণ করে নড়ছে বাপের মুখ ; তাই দেখে ওরা একেবারে জ্বলে উঠল বুকবলে উঠল, “দেবতাকে তোর কেন মরিস ডাকি । তার দয়াটা বাচিয়ে যেটুক আজও রইল বাকি ভার নেব তার নিজের পরেই, ঘটুক-নাকে যাই। আর, এর বাড়া তো সর্বনাশের সম্ভাবনা নাই। আর ।” এই বলে সে বাড়ি ছেড়ে পাকের পথে ঘুরে চিহ্ন-দেওয়া নিজের গোরু অনেক দূরে দূরে গোটা পাচেক খোজ পেয়ে তার আনলে তাদের কেড়ে, মাথা ভাঙবে ভয় দেখাতেই সবাই দিল ছেড়ে । ব্যাবসাটা ফের শুরু করল নেহাত গরিব চালে, আশা রইল জমে উঠবে। আবার কোনোকালে । এদিকেতে প্ৰকাণ্ড এক দেনার অজগরে একে একে গ্ৰাস করছে যা আছে তার ঘরে । একটু যদি এগোয় আবার পিছন দিকে ঠেলে, দেনা-পাওনা দিনরাত্ৰি জোয়ার-ভাটা খেলে । মাল। তদন্ত করতে এল দুনিয়ার্টাব্দ বেনে, WIKIGK CGGGRIS JAPF KPG R ছেলেটা ওর জেদ ধরেছে- ওই সুধিয়া গাই পুষিবে ঘরে আপনি করে ওইটে নেহাত চাই । সামীরু বলে, “তোমার ঘরে কী ধন আছে কত আমাদের এই সুধিয়াকে কিনে নেবার মতো । ও যে আমার মানিক, আমার সাত রাজার ওই ধন, আর যা আমার যায় সবই যাক, দুঃখিত নয় মন ।