পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলমোড়া \|\O8 ছড়ার ছবি আকাশ শিশুকালের থেকে আকাশ আমার মুখে চেয়ে একলা গেছে ডেকে । দিন কাটত কোণের ঘরে দেয়াল দিয়ে ঘেরা কাছের দিকে সর্বদা মুখ-ফেরা ; তাই সুদূরের পিপাসাতে অতৃপ্ত মন তপ্ত ছিল। লুকিয়ে যেতেম ছাতে, চুরি করতেম আকাশভরা সোনার বরন দুটি, নীল অমৃতে ডুবিয়ে নিতেম ব্যাকুল চক্ষু দুটি । দুপুর রৌদ্রে সুদূর শূন্যে আর কোনো নেই পাখি, কেবল একটি সঙ্গবিহীন চিল উড়ে যায় ডাকি নীল অদৃশ্যপানে ; আকাশপ্রিয় পাখি ওকে আমার হৃদয় জানে । স্তন্ধ ডানা প্রখর আলোর বুকে যেন সে কোন যোগীর ধেয়ান মুক্তি-অভিমুখে । তীব্রু তীব্র সুর সূক্ষ্ম হতে সূক্ষ্ম হয়ে দূরের হতে দূর Cow &S be বৈরাগী ওই পাখির ভাষা মন কঁাপিয়ে তোলে । আলোর সঙ্গে আকাশ যেথায় এক হয়ে যায় মিলে শুত্রে এবং নীলে তীর্থ আমার জেনেছি সেইখানে অতল নীরবতার মাঝে অবগাহনমানে । আবার যখন ঝঞ্জা, যেন প্ৰকাণ্ড এক চিল এক নিমেষে ছো মেরে নেয় সব আকাশের নীল, দিকে দিকে ঝাপটে বেড়ায় স্পৰ্ধাবেগের ডানা, মানতে কোথাও চায় না। কারো মানা, বারে বারে তড়িৎশিখার চক্ষু আঘাত হানে অদৃশ্য কোন পিজরটার কালো নিষেধাপানে, আকাশে আর ঝড়ে আমার মনে সব-হারানো ছুটির মূর্তি গড়ে । তাই তো খবর পাইশান্তি সেও মুক্তি, আবার অশান্তিও তাই।