পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y VS রবীন্দ্র-রচনাবলী বিক্ৰম । আমার মীনকেতু অশাস্ত্রীয় ; অনুষ্টিভ-ক্রিষ্টভের বন্ধন মানেন না। তিনি প্রলয়েরই দেবতা । রুদ্রভৈরবের সঙ্গেই তার অন্তরের মিল- পিনাক ছদ্মবেশ ধরেছে তার পুষ্পধনুতে । দেবদত্ত । মহারাজ, ঐ দেবতাটিকে যথাসাধ্য পাশ কাটিয়ে চলবােরই চেষ্টা করেছি। আভাসে যেটুকু জানাশোনা ঘটেছে তাতে ভৈরবের সঙ্গে অন্তত বেশেভূষায় ওঁর যথেষ্ট মিল দেখতে পাই নি । বিক্রম । তার কারণ, এ পর্যন্ত রতি নিজেরই বেশের অংশ দিয়ে কন্দপকে সাজিয়েছে । তাকে রাঙিয়েছে নিজেরই কাজলের কালিমায়, কুন্ধুমের রক্তিময়, নীল কাঞ্চলিকার নীলিমায়- উনি রমণীর লালনে লালিতে আচ্ছন্ন আবিষ্ট, তাই তো বজ্ৰপাণি ইন্দ্রের সভায় উনি লজ্জিত ভাবে চরের বৃত্তি করেন । রুদ্রের পৌরুষের আগুনে তাই তো ওঁকে দগ্ধ করেছিল । দেবদত্ত । সে ইতিহাস তো চুকে গেছে। আবার সেই পোড়া দেবতাকে নিয়ে কেন এই উপসৰ্গ । পুনর্বাের ওঁকে পোড়াতে হবে নাকি । বিক্ৰম । না, তাকে মৃত্যুর ভিতর দিয়েই বাচাতে হবে- সেজন্যে বীরের শক্তি চাই। তোমাদের ভৈরবের স্তব সম্পূর্ণ হবে না। আমাদের মীনকেতুর স্তব যদি তার সঙ্গে না যোগ করি । ভস্ম-অপমান শয্যা ছাড়ো, পুষ্পধনু, রুদ্রবহ্নি হতে লাহাে জ্বলন্দৰ্চি তনু । যাহা মরণীয় যাক মরে, জাগো অবিস্মরণীয় ধ্যানমূর্তি ধরে । যাহা স্কুল দগ্ধ হােক, হও নিত্য নব । মৃত্যু হতে জাগো পুষ্পধনু, হে অতনু, বীরের অনুতে লাহাে তনু । তোমরা জান না, মহেশ্বর মদনকে অগ্নিবীর দিয়েছিলেন, মৃত্যু দিয়েই তিনি তাকে অমর করেছেন । অনঙ্গই অমৃত দেবার অধিকারী হয়েছেন । মৃত্যুঞ্জয় যে-মৃত্যুরে দিয়েছেন হানি অমৃত সে-মৃত্যু হতে দাও তুমি আনি । সেই দিব্য দীপ্যমান দাহ উন্মুক্ত করুক অগ্নি-উৎসের প্রবাহ। মিলনেরে করুক প্রখর, বিচ্ছেদেরে করে দিক দুঃসহ সুন্দর। মৃত্যু হতে ওঠে। পুষ্পধনু, হে অতনু, বীরের অনুতে লাহাে তনু৷ মীনকেতুর পথ সহজ পথ নয়, সে নয় পুষ্পবিকীর্ণ ভোগের পথ, সে দেয় না। আরামের তৃপ্তি। দেবদত্ত । শুনে ভয় হয় । কিন্তু যা নিয়ে বিপদ ঘটে তার কারণ হচ্ছে অনঙ্গদেব যে-ঘরকে তার পায়ের ধূলিলেপনে চিহ্নিত করে নেন, সে-ঘরে অন্য কোনো দেবতাকে প্রবেশ করতে দেন না । তাতেই পূজনীয়দের মনে ঈর্ষা জন্মায়। বিক্রম। মনে হচ্ছে কথাটা আমাকেই লক্ষ্য করে । সাহস বাড়ছে। দেবদত্ত । রাজার সঙ্গে বন্ধুত্ব দুঃসাহসের চরম । ভাগ্যদোষেই রাজার বন্ধু দুমুখ। ইচ্ছাক্রমে নয়। বিক্রম। তবে মুখ খোলো। স্পষ্ট করেই বলো, প্ৰজারা আমার নামে কী বলছে। দেবদত্ত। তারা বলছে, অন্তঃপুরের অবগুণ্ঠনতলে সমান্ত রাজ্যে আজ প্রদোবান্ধকার । রাজলক্ষ্মী ब्राडीव्र छाम्राग्न प्रान ।