পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SAo রবীন্দ্র-রচনাবলী এখানে চন্দ্রোদায়ের মুহুর্তে কেশরকুঞ্জো ভগবান মকরকেতনের পূজা, রাজার আদেশ । নাচগান বাজনা অনেক হবে, তার সঙ্গে তোমার কণ্ঠস্বর একটুও মিলবে না। রত্নেশ্বর। না মিলুক, কিন্তু রাজার চরণ মিলবে। দেবদত্ত । রাজাকে রাজসভায় পাওয়াই হচ্ছে পাওয়া, অস্থানে তার অরাজকত্ব । অপেক্ষা করো, কাল নিজে তোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাব । রত্নেশ্বর । ঠাকুর, তোমাদের সবুর সয় । আমার যে সর্বাঙ্গ জ্বলে যাচ্ছে, প্রত্যেক মুহুর্ত অসহ্য । আমাদের সব চেয়ে দুর্ভাগ্য এই যে, যমযন্ত্রণাও যখন পাই, অপমানের শূলের উপর যখন চড়ে থাকি তখনো অপেক্ষা করে থাকতে হয় রাজশাসনের জনো, নিজের হাত পত্নী। ধিক বিধাতাকে । দেবদত্ত । এখন একটু থামো, ঐ মহারানী আসছেন । ওঁর কাছে আর্তনাদ করে খৃষ্টতা কোরো না । রত্নেশ্বর । আমার সৌভাগ্য, আপনি এসেছেন মহারানী, সমস্ত রাস্তা ওঁরই তো দর্শন কামনা করে এসেছি । দেবদত্ত । যিনি দুঃখ পান ঠাকেই দুঃখ দিতে চাও তোমরা ? জান না, বিচারের ভার ওঁর পরে নেই, রাজ্যশাসন করেন রাজা । রত্নেশ্বর । মহারানী মা ! সুমিত্রার প্রবেশ সুমিত্রা। কী বৎস, তুমি কে । দেবদত্ত । ও কেউ না, নাম রত্নেশ্বর, এসেছে বুধকোটি থেকে ; এর বেশি। ওর পরিচয় নেই। পায়ের ধুলো নিয়েই চলে যাবে। হল তো দৰ্শন- চল এখন ঘরে, আমার ব্ৰাহ্মণীর প্রসাদ পাবি । সুমিত্ৰা । বুধকোট, সে তো শিলাদিত্যের শাসনে । বলে দেখি তার ব্যবহার কী রকম। দেবদত্ত । মহারানী, এ-সব প্রশ্ন। এখানকার কোকিলের ডাকের মধ্যে ভালো শোনাচ্ছে না । আমি ওকে কালই নিজে রাজসভায় নিয়ে যাব । রত্নেশ্বর । রাজসভা ! মহারানী, সেখানে কোনো আশা নেই বলেই এই উৎসবের প্রাঙ্গণে অভিযোগ এনেছি। সুমিত্ৰা । কেন আশা নেই। রত্নেশ্বর । শিলাদিত্য স্বয়ং রাজধানীতে উপস্থিত, আমাদের কান্না চাপা দেবার জন্যে । তিনি বসেন রাজার কানের কাছে, আমরা থাকি দূরে । সুমিত্ৰা । কোনো ভয় নেই তোমার, কী বলতে চাও আমার কাছে বলে । রত্নেশ্বর । সতীতীর্থ ভূগুকুট পাহাড়ের তলে । আমাদেরই রাজকুলের মহিষী মহেশ্বরী সেখানে স্বামীর অনুমৃত্যু হয়েছিলেন, সে আজ পাচশো বছরের কথা । সুমিত্ৰা । সেই সতীকাহিনী তো ভাটের মুখে শুনেছি। আমার বিবােহদিনে । রত্নেশ্বর । তারই সিঁদুরের কীেটাে সেখানে সমাধিমন্দিরে । সুমিত্ৰা । সেই কীেটাের সিঁদুর বিবাহকালে আমিও পরেছি। রত্নেশ্বর । আমাদের মেয়েরা তীর্থে যায়, সেই কীেটাের সিঁদুর মাথায় পরে পুণ্য কামনায়। এতকাল cकiना बाक्षी श्य नेि । সুমিত্ৰা । এখন কি বাধা ঘটেছে । রত্নেশ্বর । ইয়া, মহারানী । সুমিত্ৰা । কিসের বাধা । রত্নেশ্বর। শিলাদিত্য তীৰ্থদ্বারে কর বসিয়েছে। দরিদ্র মেয়েদের পক্ষে দুঃসাধ্য হল । হাত থেকে তাদের কঙ্কণ কেড়ে নিয়ে কর আদায় হচ্ছে । সুমিত্ৰা । কী বললে ! মহারাজের সম্মতি আছে। এতে ?