পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপতী। Σ δΣ ২। ওরে বুন্ধু, এই খানেক আগেই তোকে দোমনা দেখেছি, একমুহুর্তে রাজভক্তি ভরপুর হয়ে উঠল কিসে । SS TBB BDBLOO LLD LDOST OO S S ৩ । তুই তো ছাগল চরাতে গিয়েছিলি, উত্তরখণ্ডের খবর কিছু এনেছিস ? ১ । কাউকে যদি না বলে তো বলি । ৩ । ভয় কিসের । বলে ফেল না । ১ । বললে না প্রত্যয় যাবে স্বয়ং রানী সুমিত্রাকে দেখেছি। ভৈরবীবেশে চলেছেন ধ্রুবতীর্থে। ২ । পাগল রে ! প্ৰথম । না গো, উনি মিথ্যা বলছেন না । আমিও শুনেছি বটে । কাউকে বলতে সাহস করি নি । ৩ । কার কাছে শুনলে । প্ৰথমা । ঐ যে আমার ভাসুরবি মন্দাকিনী । তীর্থ করে ফিরে আসছিল। পথে দেখা ; রাজকুমারী চলেছেন মার্তগুদেবের উপাসিকার দীক্ষা নিতে । ২। বিশ্বাস করি কী করে । বুদ্ধ, তোর সঙ্গে কথা হল কিছু ? ১ । প্ৰণাম করে বললুম, তুমি আমাদের রাজকুমারী সুমিত্ৰা । তিনি বললেন, আমার নাম তপতী । জানিস তো সেই অপরাপ রূপ । সেই লাবণ্য যেন আগুনে স্নান করে এল । বললেম, দেবী, চরণের সেবক হয়ে যাই সঙ্গে । তিনি নীরবে তর্জনী তুলে ফিরে যেতে ইঙ্গিত করলেন । ৩। দুৰ্গম তীর্থে রাজকুমারী একলা চলেছেন, তুই এখানে এসে রাজবাড়িতে জানালি নে ? ১ । দুই-একজনকে জানাতে গিয়েছিলেম- আমাকে মারে আর কি । বলে, আমি নেশা করেছি। ! আর-একজনের প্রবেশ ৪ । কিছুতে রাজি হল না । ২ । কার কথা বলছি । ৪ । আমাদের সভাকবি দর্দুর । খুড়োমহারাজের আশ্রয় ছাড়তে সাহস করল না। আজ অভিষেকে কোনোরকমের একটা সভাকবি চাই তো । ৩ । চাই বৈকি। আজকের মতো। রীতিরক্ষা করে তার পরে সংক্ষেপে বিদায় করলেই হবে । ৪ । জোগাড় করেছি একটি । ময়ু তাকে নিয়ে আসছে। বিদেশী, যাচ্ছে ধ্রুবতীর্থে, সঙ্গে নারী আছে । ৩ । এর থেকেই ঠাওরালে সে কবি ? ৪ । দেখলেম, গাছতলায় বসে মেয়েটি গান গাচ্ছে আর সে বাজাচ্ছে একতারা । মুখ দেখেই সন্দেহ হল লোকটা আর কিছুই না পারুক, গান বানাতে পারে । সিধে গিয়ে বললুম, তুমি কবি, চলো রাজার অভিষেকে । প্রথমটা কিছুতেই মানতে রাজি নয়। ভাবলে তাকে পাগল বললুম, না বোকা বললুম। সঙ্গের মেয়েটি বলল, হা, ইনি কবি বৈকি, নিশ্চয় কবি, অভিষেকে যেতে হবেই তো । আমনি মানুষটা জল হয়ে গেল- আর 'না' বলবার জো রইল না । ৩ । 'না' বলবার মতো মেয়েটি নয় বোধ করি । ৪ । একেবারেই না । দেখলেম দিব্যি বশ মেনেছে । মেয়েটি যদি বলত, চলো, লড়াই করবে, তবে তখনই ছুটত লড়াই করতে, কবিতা লেখা তো সামান্য কথা । ২ । শুনে বুঝছি, লোকটি কবি । মনে তো আছে, আমাদের ধরণীদাস । গীেরীতিরাইয়ের নথনি বুনত শাল, ধরণী আন্তে আস্তে এসে দাড়াত তার আঙিনার কোণে । আর সে দিত। তার কুণ্ডল বুলিয়ে ঝংকার, তারই চোটে ধরণী সাত খাতা জুড়ে ছড়া লিখছে । খেতুলাল, তুই ধরেছিস ঠিক, লোকটা কবি । ৪ । হোক, বা না হোক, চেহারায় মানাবে । ঐ-যে আসছে ।