পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नदीन RSRSO অরণ্যে তোর সুর ছিল না, বাতাস হিমে ভরা। জীর্ণ পাতায় কীর্ণকানন, পুষ্পবিহীন ধরা। এবার জাগ রে হতাশ, আয় রে ছুটে অবসাদের বাঁধন টুটে, বুঝি এল তোমার পথের সাথি উতল উচ্ছাসে।।* উৎসবের সোনার কাঠি তোমাকে দুয়েছে, চোখ খুলেছে ; এইবার সময় হল চার দিক দেখে নেবার । আজ দেখতে পাবে ঐ, শিশু হয়ে এসেছে চির নবীন, কিশলয়ে তার ছেলেখেলা জমাবার জন্যে। তার দোসর হয়ে তার সঙ্গে যোগ দিল ঐ সূর্যের আলো, সেও সাজিল শিশু, সারাবেলা সে কেবল ঝিকিমিকি করছে । ঐ তার কলপ্ৰলাপ | ওদের নাচে নাচে মর্মরিত হয়ে উঠল প্ৰাণগীতিকার প্রথম ধুয়োটি । 92ों अकाge bशक আবার একবার চেয়ে দেখে- অবজ্ঞায় চোেখ ঝাপসা হয়ে থাকে, আজ সেই কুয়াশা। যদি কেটে যায়। তবে যাকে তুচ্ছ বলে দিনে দিনে এড়িয়ে গেছ তাকে দেখে নাও তার আপন মহিমায়। ঐ দেখো ঐ বনফুল, মহাপথিকের পথের ধারে ও ফোটে, তার পায়ের করুণ স্পর্শে সুন্দর হয়ে ওঠে। ওর প্ৰণতি । সূর্যের আলো ওকে আপনি বলে চেনে ; দখিন হাওয়া ওকে শুধিয়ে যায় 'কেমন আছ । তোমার গানে আজ ওকে গৌরব দিক । এরা যেন কুরুরাজের সভায় শূদ্রার সন্তান বিদুরের মতো, আসন বটে। নীচে, কিন্তু সম্মান স্বয়ং ভীষ্মের চেয়ে কম নয় । আজি দখিন বাতাসে* কাব্যলোকের আদরিণী সহকারমঞ্জরীকে আর চিনিয়ে দিতে হবে না । সে আপনাকে তো লুকোতে জানে না । আকাশের হৃদয় সে অধিকার করেছে, মৌমাছির দল বন্দনা করে তার কাছ থেকে অজস্র দক্ষিণা নিয়ে যাচ্ছে । সকলের আগেই উৎসবের সদাব্রত ও শুরু করে দিয়েছিল, সকলের শেষ পর্যন্ত ওর আমন্ত্রণ রইল খোলা । কোকিল ওর গুণগান দিনে রাতে আর শেষ করতে পারছে না- তোমরাও न् क्963 | ও মঞ্জরী, ও মঞ্জরী, আমের মঞ্জরী দীর্ঘ শূন্য পথটাকে এতদিন ঠেকেছিল বড়ো কঠিন, বড়ো নিষ্ঠুর । আজ তাকে প্ৰণাম । পথিককে সে তো অবশেষে এনে পৌছিয়ে দিলে। তারই সঙ্গে এনে দিলে অসীম সাগরের বাণী । দুৰ্গম উঠল সেই পথিকের মধ্যে গান গেয়ে । কিন্তু আনন্দ করতে করতেই চোখে জল আসে-যে। ভুলব কেমন করে যে, যে পথ কাছে নিয়ে আসে সেই পৰ্থই দূরে নিয়ে যায়। পথিককে ঘরে আটক করে না। বাধন ছিড়ে নিজেও বেরিয়ে না পড়লে ওর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঠেকাবে কী করে ? আমার ঘর-যে ওর যাওয়া-আসার পথের মাঝখানে ; দেখা দেয় যদি-বা, তার পরেই সে দেখা আবার কেড়ে নিয়ে চলে पग्न | মোর পথিকেরে বুঝি এনেছ এবার করুণ রঙিন পথ তবু ওকে ক্ষণকালের বাধন পরিয়ে দিতে হবে। টুকরো টুকরো সুখের হার গাথব- পরাব ওকে মাধুর্যের মুক্তোগুলি । ফাগুনের ভরা সাজি থেকে যা-কিছু ঝরে ঝরে পড়ছে কুড়িয়ে নেব, বনের মর্মর, বকুলের গন্ধ, পলাশের রক্তিমা- আমার বাণীর সূত্রে সব গেঁথে বেঁধে দেব তার মণিবন্ধে। হয়তো আবার আর-বিসন্তেও সেই আমার-দেওয়া ভূষণ পরেই সে আসবে। আমি থাকব না, কিন্তু কী জানি, আমার দানের ভূষণ হয়তো থাকবে ওর দক্ষিণ হাতে । ফাগুনের নবীন আনন্দে