পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓigqማ፣ K)Se অভিনিবেশ লেশমাত্র ছিল না। সেদিন নিতান্তই সময়ব্যাপনের উদ্দেশে বায়ুভরে উত্তীন চু্যতাপত্রের মতো ইতস্তত ফিরিতেছিলাম । উত্তর দিকের ঘরের দরজা খুলিবামাত্র একটি ক্ষুদ্র বারান্দায় গিয়া উপস্থিত হইলাম। বারান্দার সম্মুখেই বাগানের উত্তরসীমার প্রাচীরের গাত্রসংলগ্ন দুইটি বৃহৎ জামের গাছ মুখামুখি করিয়া দাড়াইয়া আছে। সেই দুইটি গাছের মধ্যবর্তী অবকাশ দিয়া আর-একটি বাগানের সুদীর্ঘ বকুলবীথির কিয়দংশ प्रथों यां । কিন্তু সে-সমন্তই আমি পরে প্রত্যক্ষ করিয়াছিলাম, তখন আমার আর-কিছুই দেখিবার অবসর হয় নাই, কেবল দেখিয়াছিলাম, একটি যোড়শী যুবতী হাতে একখানি বই লইয়া মন্তক আনমিত করিয়া পদচারণা করিতে করিতে অধ্যয়ন করিতেছে । ঠিক সে-সময়ে কোনোরাপ তত্ত্বালোচনা করিবার ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু কিছুদিন পরে ভাবিয়ছিলাম যে, দুৰ্য্যন্ত বড়ো বড়ো বাণ শরাসন বাগাইয়া রথে চড়িয়া বনে মৃগয়া করিতে আসিয়াছিলেন, মৃগ তো মরিল না, মাঝে হইতে দৈবাৎ দশমিনিট কাল গাছের আড়ালে দাড়াইয়া যাহা দেখিলেন, যাহা শুনিলেন, তাহাই তাহার জীবনের সকল দেখাশুনার সেরা হইয়া দাড়াইল । আমিও পেন্সিল কলম এবং খাতপত্র উদ্যত করিয়া কাব্যমৃগয়ায় বাহির হইয়াছিলাম, বিশ্বপ্ৰেম বেচারা তো পলাইয়া রক্ষা পাইল, আর আমি দুইটি জামগাছের আড়াল হইতে যাহা দেখিবার তােহাঁ দেখিয়া লইলাম ; মানুষের একটা জীবনে এমন দুইবার দেখা যায় না । পৃথিবীতে অনেক জিনিসই দেখি নাই। জাহাজে উঠি নাই, বেলুনে চড়ি নাই, কয়লার খনির মধ্যে নামি নাই- কিন্তু আমার নিজের মানসী আদর্শের সম্বন্ধে আমি যে সম্পূর্ণ ভ্ৰান্ত এবং অজ্ঞ ছিলাম তাহা এই উত্তর দিকের বারান্দায় আসিবার পূর্বে সন্দেহমাত্র করি নাই। বয়স একুশ প্রায় উত্তীর্ণ হয়, ইতিমধ্যে আমার অন্তঃকরণ কল্পনাযোগবলে নারীসৌন্দর্যের একটা ধ্যানমূর্তি যে সৃজন করিয়া লয় নাই, এ কথা বলিতে পারি না । সেই মূর্তিকে নানা বেশভূষায় সজ্জিত এবং নানা অবস্থার মধ্যে স্থাপন করিয়াছি, কিন্তু কখনো সুদূর স্বপ্নেও তাহার পায়ে জুতা, গায়ে জামা, হাতে বই দেখিব। এমন আশাও করি নাই, ইচ্ছাও করি নাই। কিন্তু আমার লক্ষ্মী ফাল্গুন-শেষের অপরাহুে প্ৰবীণ তরুশ্রেণীর আকম্পিত ঘনপল্লববিতানে দীর্ঘনিপতিত ছায়া এবং আলোক-রেখাঙ্কিত পুষ্পবনপথে, জুতা পায়ে দিয়া, জামা গায়ে দিয়া, বই হাতে করিয়া, দুইটি জামগাছের আড়ালে অকস্মাৎ দেখা দিলেন- আমিও কোনো কথাটি কহিলাম না । দুই মিনিটের বেশি আর দেখা গেল না । নানা ছিদ্ৰ দিয়া দেখিবার নানা চেষ্টা করিয়াছিলাম। কিন্তু কোনো ফল পাই নাই। সেইদিন প্রথম সন্ধ্যার প্রাকালে বটবৃক্ষতলে প্রসারিত চরণে বসিলামআমার চোখের সম্মুখে পরপারের ঘনীভূত তরুশ্রেণীর উপর সন্ধাতারা প্রশান্ত স্মিতহাস্যে উদিত হইল, এবং দেখিতে দেখিতে সন্ধ্যাশ্রী আপন নাথহীন বিপুল নির্জন বাসরগুহের দ্বার খুলিয়া দিয়া নিঃশব্দে দাড়াইয়া রহিল । যে বইখানি তাহার হাতে দেখিয়ছিলাম সেটা আমার পক্ষে একটা নূতন রহস্য নিকেতন হইয়া দাড়াইল । ভাবিতে লাগিলাম, সেটা কী বই। উপন্যাস অথবা কাব্য ? তাহার মধ্যে কী ভাবের কথা আছে । যে পাতাটি খোলা ছিল এবং যাহার উপরে সেই অপরাদুবেলার ছায়া ও রবিরশ্মি, সেই বকুলবনের পল্লবমর্মর এবং সেই যুগলচক্ষুদ্র ঔৎসুক্যপূর্ণ স্থিরদৃষ্টি নিপতিত হইয়াছিল, ঠিক সেই পাতাটিতে গল্পের কোন অংশ, কাব্যের কোন রসাটুকু প্ৰকাশ পাইতেছিল। সেইসঙ্গে ভাবিতে লাগিলাম, ঘনমুক্ত কেশজালের অন্ধকারচ্ছায়াতলে সুকুমার ললাটমণ্ডপটির অভ্যন্তরে বিচিত্র ভাবের BDBBB BDB DDD BDD BB DuBDuBDS BDBDDDBuDB DuD DDDDBB BB DDDD DDD কাব্যমায়া কী অপূর্ব সৌন্দর্যলোক সৃজন করিতেছিল- অর্ধেক রাত্রি ধরিয়া এমন কত কী ভাবিয়ছিলাম তাহা পরিস্ফুটরাপে ব্যক্ত করা অসম্ভব। কিন্তু, সে যে কুমারী এ কথা আমাকে কে বলিল। আমার বহুপূর্ববতী প্রেমিক দুৰ্য্যন্তকে