পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'S SObyr রবীন্দ্র-রচনাবলী বকশিশ ।” লাবণ্য হাসিয়া কহিল, “ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব আজকাল গোলাপজল বিক্রি ধরিয়াছেন নাকি । এমন অত্যন্ত ঠাণ্ডা ব্যবসায় তো তাহার পূর্বে ছিল না।” হতভাগ্য নবেন্দু গোলাপজলের সহিত ম্যাজিষ্ট্রেট-দর্শনের সামঞ্জস্য সাধন করিতে গিয়া কী যে আবোলতাবোল বলিল তাহ কেহ বুঝিতে পারিল না। নীলরতন কহিল, “বকশিশের কোনো কাজ হয় নাই। বকশিশ নাহি মিলেগা ।” লুকুভাবে পকে হতে একটা লেট বহির হরিয়া ফািল উত্তর গরিব মানুহ লৈ फ्रिाऊ (प्राक्ष दैी ” নীলরতন নবেন্দুর হাত হইতে নোট টানিয়া লইয়া কহিল, “উহাদের অপেক্ষা গরিব মানুষ জগতে আছে, আমি তাহাদিগকে দিব ।” রুষ্ট মহেশ্বরের ভূতপ্ৰেতগণকেও কিঞ্চিৎ ঠাণ্ডা করিবার সুযোগ না পাইয়া নৰেন্দু অত্যন্ত ফাঁপরে পডিয়া গেল। পেয়াদগণ যখন বজ্ৰদূষ্টি নিক্ষেপ করিয়া গমনোদ্যত হইল, তখন নবেন্দু একান্ত করুণভাবে তাহদের দিকে চাহিলেন ; নীরবে নিবেদন করিলেন, “‘বাবাসকল, আমার কোনো দোষ নেই, তোমরা তো জান !” কলিকাতায় কনগ্রেসের অধিবেশন । তদুপলক্ষে নীলরতন সন্ত্রীক রাজধানীতে উপস্থিত হইলেন। নবেন্দুও তঁহাদের সঙ্গে ফিরিল। কলিকাতায় পদার্পণ করিবামাত্র কনগ্রেসের দলবল নবেন্দুকে চতুদিকে ঘিরিয়া একটা প্ৰকাণ্ড তাণ্ডব শুরু করিয়া দিল । সম্মান সমাদর স্তুতিবাদের সীমা রহিল না । সকলেই বলিল, “আপনাদের মতো নায়কগণ দেশের কাজে যোগ না দিলে দেশের উপায় নাই।” কথাটার যাথার্থী নবেন্দু অস্বীকার করিতে পারিলেন না, এবং গোলেমালে হঠাৎ কখন দেশের একজন অধিনায়ক হইয়া উঠিলেন । কনগ্রেস-সভায় যখন পদার্পণ করিলেন তখন সকলে মিলিয়া উঠিয়া দাড়াইয়া বিজাতীয় বিলাতী। তারস্বরে ‘হিপ হিপ হুরে’ শব্দে তাঁহাকে উৎকট অভিবাদন করিল। আমাদের মাতৃভূমির কৰ্ণমূল লােজায় রক্তিম হইয়া উঠিল । যথাকলে মহারানীর জন্মদিন আসিল, নবেন্দু রায়বাহাদুর খেতাব নিকটসম্যাগত মরীচিকার মতো অন্তর্ধান করিল। সেইদিন সায়াহ্নে লাবণ্যলেখা সমারোহে নবেন্দুকে নিমন্ত্রণপূর্বক ঠাহাকে নববত্রে ভূষিত করিয়া স্বহন্তে তাহার ললাটে রক্তচন্দনের তিলক এবং প্রত্যেক শ্যালী ঠাহার কণ্ঠে একগাছি করিয়া স্বরচিত পুষ্পমালা পরাইয়া দিল । অরুণাম্বরবাসনা অরুণলেখা সেদিন হস্যে লজায় এবং অলংকারে আড়াল হইতে ঝকমক করিতে লাগিল। তাহার স্বেদাঙ্কিত লজ্জাশীতল হন্তে একটা গোড়েমােলা দিয়া ভগিনীরা তাহাকে টানাটানি করিল। কিন্তু সে কোনোমতে বশ মানিল না এবং সেই প্রধান মাল্যখানি নবেন্দুর কণ্ঠ কামনা করিয়া জনহীন নিশীথের জন্য গোপনে অপেক্ষা করিতে লাগিল । শ্যালীরা নবেন্দুকে কহিল, “আজ আমরা তোমাকে রাজা করিয়া দিলাম ! ভারতবর্ষে এমন সম্মান তুমি ছাড়া আর কাহারও সম্ভব शैक्षेत्र ना ” নবেন্দু ইহাতে সম্পূর্ণ সাত্মনা পাইল কি না তাহা তাহার অন্তঃকরণ আর অন্তর্যামীই জানেন, কিন্তু আমাদের এ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সন্দেহ রহিয়া গিয়াছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, মরিবার পূর্বে সে রায়বাহাদুর হইবেই এবং তাহার মৃত্যু উপলক্ষে Englishman ও Pioneer সমন্বয়ে শোক করিতে ছাড়িবে না। অতএব, ইতিমধ্যে Three Cheers for বাবু পূর্ণেন্দুশেখর ! হিপ হিপ হুরে, হিপ হিপ হরে, হিপ হিপ श: ! vefa yeo6