পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মন্দিরে সন্ধ্যারতির যে কাসরঘণ্টা বাজিতেছিল, তাহা যেন কোন একটি গতৰ্জীবনের পরপ্রান্ত হইতে সুগভীর একটা বিদায়ের বার্তা বহিয়া তাহার কানের কাছে আসিয়া পীেড়িতে লাগিল। সামনে যাহা-কিছু দেখিতেছে, এই মাটির প্রাচীর, এই চালাঘর, এই রুদ্ধ কপাট, এই জিগরগাছের বেড়া, এই হেলিয়া-পড়া খেজুরগাছ- সমস্তই যেন একটা হারানো সংসারের ছবিমাত্র, কিছুই যেন সত্য নহে। গোপাল আসিয়া কাছে দাড়াইল। রসিক পাংশুমুখে গোপালের মুখের দিকে চাহিল, গোপাল কিছু না বলিয়া চোখ নিচুকরিল। রসিক বলিয়া উঠিল, “বুঝেছি, বুঝেছি।--দাদা নাই!” অমনি সেইখনেই দরজার কাছে সে বসিয়া পড়িল। গোপাল তাহার পাশে বসিয়া কহিল, “ভাই রসিকদাদা, চলো আমাদের বাড়ি চলো।” রসিক তাহার দুই হাত ছাড়াইয়া দিয়া সেই দরজার সামনে উপুড় হইয়া মাটিতে লুটাইয়া পড়িল। দাদা ! দাদা ! দাদা ! যে দাদা তাহার পায়ের শব্দটি পাইলে আপনিই চুটিয়া जानिऊ (काश8 उाशन (कjना जाgा १ों&ग्रा (शल ना । গোপালের বাপ আসিয়া অনেক বলিয়া কহিয়া রসিককে বাড়িতে লইয়া আসিল। রসিক সেখানে প্রবেশ করিয়াই মুহুর্তকালের জন্য দেখিতে পাইল, সীেরভী সেই তাহার চিত্রিত কাথায় মোড়া কী একটা জিনিস অতি যত্নে রোয়কের দেয়ালে ঠেসান দিয়া রাখিতেছে। প্রাঙ্গণে লোকসমাগমের শব্দ পাইবামােত্রই সে চুটিয়া ঘরের মধ্যে অন্তৰ্হিত হইল। রসিক কাছে আসিয়াই বুঝিতে পারিল, এই কাথায় মোড়া পদার্থটি একটি নূতন বাইসকল। তৎক্ষণাৎ তাহার অর্থ বুঝিতে আর বিলম্ব হইল না। একটা বুকফাটা কান্না বক্ষ ঠেলিয়া তাহার কােঠর কাছে পাকাইয়া পাকাইয়া উঠিতে লাগিল এবং চোখের জলের সমস্ত রাস্তা যেন ঠাসিয়া বন্ধ করিয়া ধরিল। রসিক চলিয়া গেলে বংশী দিনরাত্রি অবিশ্রাম খাটিয়া সীেরভীর পণ এবং এই বাইসকল কিনিবার টাকা সঞ্চয় করিয়াছিল। তাহার এক মুহূর্ত আর-কোনো চিন্তা ছিল না। ক্লান্ত ঘোড়া যেমন প্ৰাণপণে B BDBDBB BBB BBD BDDD DS BDD DD BOu DDD D DDDD DDD বাইসিকেলটিভি, পি, ডাকে পাইল সেইদিনই আর তাহার হাত চলিলনা, তাহারােষ্ঠাত বন্ধ হইয়া গেল ; গোপালের পিতাকে ডাকিয় তাহার হাতে ধরিয়া সে বলিল, “আর-একটি বছর রসিকের জন্য অপেক্ষা করিয়ো- এই তোমার হাতে পণের টাকা দিয়া গেলাম, আর যেদিন রসিক আসিবে তাহাকে এই চাকার গাড়িটি দিয়া বলিয়ো- দাদার কাছে চাহিয়াছিল, তখন হতভাগ্য দাদা দিতে পারে নাই, কিন্তু তাই বলিয়া মনে যেন সে রাগ না রাখে ।” দাদার টাকার উপহার গ্রহণ করিবে না একদিন এই শপথ করিয়া রসিক চলিয়া গিয়াছিলবিধাতা তাহার সেই কঠোর শপথ শুনিয়াছিলেন । আজ যখন রসিক ফিরিয়া আসিল তখন দেখিল দাদার উপহার তাহার জন্য এতদিন পথ চাহিয়া বসিয়া আছে- কিন্তু তাহা গ্ৰহণ করিবার দ্বার একেবারে রুদ্ধ। তাহার দাদা যে ঠাতেই আপনার জীবনটি বুনিয়া আপনার ভাইকে দান করিয়াছে, রসিকের ভারি ইচ্ছা করিল সব ছাড়িয়া সেই ঠাতের কাছেই আপনার জীবন উৎসর্গ করে, কিন্তু হয়, কলিকাতা শহরে টাকার হাড়কাঠে চিরকালের মতো সে আপনার জীবন বলি দিয়া আসিয়াছে। (iki yeyv