পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ಈ (ed সতেরো মাত্রার ছন্দকে কলাবৈচিত্র্যের দ্বারা আরো নব নব রূপ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সাক্ষ্মী আর বাড়াবার দরকার নেই । শেষের যে দৃষ্টান্ত দেওয়া গেছে তাতে মাত্ৰাসংখ্যাগণনা উপলক্ষে চরণে শব্দকে ভাগ করে দিয়ে এক মাত্রার ‘ণে ধ্বনিকে স্বতন্ত্ৰ কলায় বসিয়েছি। ওটা যে স্বতন্ত্রকলাভূক্ত তার প্রমাণ এই ছন্দের তাল দেবার সময় ঐ ‘ণে ধ্বনিটির উপর তাল পড়ে । ইতিপূর্বে অন্যত্র একটি নয় মাত্রার ছন্দের দৃষ্টান্ত দেবার সময় নিম্নলিখিত শ্লোকটি ব্যবহার করেছি। তাল দেবার রীতি বদল করে একে দুরকম করে পড়া যায়, দুটােই পৃথক ছন্দ । বারে বারে যায় | চলিয়া ভাসায় গো আঁখি | নীরে সে । বিরহের ছলে । ছলিয়া মিলনের লাগি | ফিরে সে । এটা ৯ মাত্রার শ্রেণীর ছন্দ ; এর দুই কলা এবং কলাগুলি ত্রৈমাত্রিক । এর পদকে তিন কলায় ভাগ করে কলাগুলিকে দুই মাত্রার ছাদ দিলে এই একই ছড়া সম্পূর্ণ নূতন ছন্দে গিয়ে পৌঁছাবে। যথা— Σ ܔ V বারে বারে | যায় চলি | যা ভাসায় গো ; আঁখিনীরে | সে। বিরহের | ছলে ছলি | ইয়া মিলনের | লাগি ফিরে | সে । সারাদিন | দহে তিয়া ! যা, বারেক না | দেখি উহা | রে । अनभाश | लीग की जा | भा অকারণে | আসে দুয়া | রে । অমূল্যবাবু বলেন, এর প্রথম দুই কলায় চার চার আট এবং শেষের কলায় এক মাত্রার ছন্দ কৃত্রিম শুনতে হয় । বোধ হয় অখণ্ড শব্দকে খণ্ডিত করা হচ্ছে বলে তার কাছে এটা কৃত্রিম ঠেকছে। কিন্তু, ছন্দের ঝোকে অখণ্ড শব্দকে দু ভাগ করার দৃষ্টান্ত অনেক আছে ! এরকম তর্কে বিশুদ্ধ ই এবং না-এর দ্বন্দ্ব ; কোনো পক্ষে কোনো যুক্তিপ্রয়োগের ফাক নেই। আমি বলছি, কৃত্রিম শোনায় না ; তিনি বলছেন, শোনায় । আমি এখনো বলি, এইরকম কলাভাগে এই ছন্দে একটি নূতন নৃত্যভঙ্গি জেগে ওঠে, তার একটা রস আছে । দশের বেশি মাত্রাভার বাংলা ছন্দ বহন করতে অক্ষম, এ কথা মানতে পারব না । নিম্নে বারো মাত্রার একটি শ্লোক দেওয়া গেল । মেঘ ডাকে গভীর গরজনে, ଜ୍ଞାସ୍ଯା ଗ୩Ciର ୯୬.୩୦:୫୫, ୪0ଲ ଅ(ମ, ঝিল্লি কনকে নীপবীথিকায় । সরোবর উচ্ছল কৃলে কুলে, তটে তারি। বেণুশাখা দুলে দুলে মেতে ওঠে। বর্ষণগীতিকায় । শ্রোতারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, আবৃত্তিকালে পদান্তের পূর্বে কোনো যতিই দিইনি, অর্থাৎ বারো মাত্রা একটি ঘনিষ্ঠ গুচ্ছের মতোই হয়েছে । এই পদগুলিকে বারো মাত্রার পদ বলবার কোনো বাধা আছে বলে আমি কল্পনা করতে পারি। নে । উল্লিখিত শ্লোকের ছন্দে বারো মাত্রা, প্ৰত্যেক পদে তিন কলা, প্ৰত্যেক কলায় চার মাত্রা । বারো মাত্রার পদকে চার কলায় বিভক্ত করে ত্রৈমাত্রিক করলে আর-এক ছন্দ দেখা দেবে । যথা