পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(? Ver রবীন্দ্র-রচনাবলী যার ভাগগুলি অসমান এমন ছন্দ দেখা যাককুংতঅরু ধগুদ্ধরু হঅবর গঅবরু ছৱালু বিবি পা ইক দলে । । এই ছন্দ সম্বন্ধে বলা হয়েছে ‘দ্বাত্রিংশাত্মাত্ৰাঃ পাদে সুপ্ৰসিদ্ধাঃ' । এই ছন্দকে বাংলায় ভাঙতে গেলে এইরকম দাড়ায় । কুঞ্জপথে জ্যোৎস্নারাতে চলিয়াছে সখীসাথে মল্লিকাকলিকার মাল্য হাতে । চার পঙক্তিতে এই ছন্দের পূর্ণরূপ এবং সেই পূর্ণরূপের মাত্ৰাসংখ্যা বত্ৰিশ । ছন্দে মাত্রাগণনার এই ধারা আমি অনুসরণ করা কর্তব্য মনে করি । মনে নেই, আমার কোনো পূর্বতন প্রবন্ধে অন্য মত প্ৰকাশ করেছি। কি না ; যদি করে থাকি তবে ক্ষমা প্রার্থনা করি । সবশেষে পুনরায় বলি, ছন্দের স্বরূপ নিৰ্ণয় করতে হলে সমগ্রের মাত্ৰাসংখ্যা, তার কলাসংখ্যা ও কলাগুলির মাত্ৰাসংখ্যা জানা আবশ্যক । শুধু তাই নয়, যেখানে ছন্দের রূপকল্প একাধিক পদের দ্বারা সম্পৰ্ণ হয়। সেখানে পদসংখ্যাও বিচাৰ্য । যথা Kesavg পাণ্ডুর মেঘ যবে ক্লান্ত বন ছাড়ি মনে এল নীপরেণুগন্ধ, ভরি দিল কবিতার ছন্দ । এখানে চারিটি পদ এবং প্রত্যেক পদ নানা অসমান মাত্রায় রচিত, সমান্তটাকে নিয়ে ছন্দের রূপকল্প । বিশেষজাতীয় ছন্দে এইরূপ পদ ও মাত্রা গণনাতেও আমি পিঙ্গলাচার্যের অনুবতী । खार्छ S०8> বাংলা ছন্দের প্রকৃতি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত আমাদের দেহ বহন করে অঙ্গপ্ৰত্যঙ্গের ভার, আর তাকে চালন করে অঙ্গপ্ৰত্যঙ্গের গতিবেগ ; এই দুই বিপরীত পদার্থ যখন পরস্পরমিলনে লীলায়িত হয় তখন জাগে নাচ । দেহের ভারটাকে দেহের গতি নানা ভঙ্গিতে বিচিত্র করে, জীবিকার প্রয়োজনে নয়, সৃষ্টির অভিপ্ৰায়ে ; দেহটাকে দেয় চলমান निम्नान । ठाकि बनि नूठा । রূপসৃষ্টির প্রবাহই তো বিশ্ব । সেই রূপটা জাগে ছন্দে, আধুনিক পরমাণুতত্বে সে কথা সুস্পষ্ট । সাধারণ বিদ্যুৎপ্রবাহ আলো দেয়, তাপ দেয়, তার থেকে রূপ দেখা দেয় না। কিন্তু, বিদ্যুৎকণা যখন বিশেষ সংখ্যায় ও গতিতে আমাদের চৈতন্যের স্বারে ঘা মারে তখনই আমাদের কাছে প্ৰকাশ পায় রূপ, কোনোটা দেখা দেয় সোনা হয়ে, কোনোটা হয় সীসে । বিশেষ সংখ্যক মাত্রা ও বিশেষবেগের গতি এই দুই নিয়েই ছন্দ, সেই ছন্দের মায়াময় না পেলে রূপ থাকে অব্যক্ত । বিশ্বসৃষ্টির এই ছন্দোরহস্য মানুষের শিল্প সৃষ্টিতে। তাই ঐতরেয় ব্রাহ্মণ বলছেন : শিল্পানি শংসতি দেবশিল্পানি। মানুষের সব