পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ሎ br S রবীন্দ্র-রচনাবলী 'পলাতকায় । এতে করে কাব্যছন্দ গদ্যের কতকটা কাছে এল বটে, তবু মেয়ে-কম্পার্টমেনট রয়ে গেল, পুরাতন ছন্দোরীতির বাধন খুলল না । এমন-কি, সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষায় আর্য প্রভৃতি ছন্দে ধ্বনিবিভাগ যতটা স্বাধীনতা পেয়েছে আধুনিক বাংলায় ততটা সাহসও প্রকাশ পায় নি। একটি প্রাকৃত ছন্দের শ্লোক উদধূত করি বরিস জল ভমই ঘণ গঅণ সিঅল পাবণ মণহরণ 歌 কণঅ-পিঅরিণচই বিজুরি ফুল্লিআ শীবা। পাথর-বিঘর-হিঅলা পিঅ'লা। [নিঅলং ] ণ আঘোই । মাত্রা মিলিয়ে এই ছন্দ বাংলায় লেখা যাক । বৃষ্টিধারা শ্রাবণে ঝরে গগনে, শীতল পবন বহে সঘনে, কনক-বিজুরি নাচে রে, অশনি গর্জন করে । নিষ্ঠুর-অন্তর মম প্ৰিয়তম নাই ঘরে । বাঙালি পাঠকের কান একে রীতিমত ছন্দ বলে মানতে বাধা পাবে তাতে সন্দেহ নেই, কারণ এর পদবিভাগ প্রায় গদ্যের মতোই অদমান । যাই হােক, এর মধ্যে একটা ছন্দের কাঠামো আছে ; সেটুকুও DBDD S DDLL DDBDB DD D DBB DBBBDB SDD SLDLLD DDBDB DB SS BBD DBB S অবিরল করেছে শ্রাবণের ধারা, বনে বনে সজল হাওয়া বয়ে চলেছে, সোনার বরন কলক দিয়ে নেচে উঠছে বিদ্যুৎ বাজ উঠছে গর্জন করে । নিষ্ঠুর আমার প্ৰিয়তম ঘরে এল না । একেও বলতে হবে কাব্য, বুদ্ধির সঙ্গে এর বোঝাপড়া নয়, একে অনুভব করতে হয় রসবোধে । সেইজন্যেই যতই সামান্য হোক, এর মধ্যে বাক্যসংস্থানের একটা শিল্পকলা শব্দব্যবহারের একটা “তেরছ চাহনি রাখতে হয়েছে । সুবিহিত গৃহিণীপনার মধ্যে লোকে দেখতে পায় লক্ষ্মীশ্ৰী, বহু উপকরণে বহু অলংকারে তার প্রকাশ নয়। ভাষার কক্ষেও অনতিভূবিত গৃহস্থালি গদ্য হলেও তাকে সম্পূর্ণ গদ্য বলা চলবে না, যেমন চলবে না। আপিসঘরের অসজ্জাকে অন্তঃপুরের সরল শোভনতার সঙ্গে তুলনা করা । আপিসঘরে ছন্দটা প্রত্যক্ষই বৰ্জিত, অন্যত্র ছন্দটা নিগৃঢ় মর্মগত, বাহ্য ভাষায় নয়, ठggक्र छl6त्यु । আধুনিক পাশ্চাত্য সাহিত্যে গদ্যে কাব্য রচনা করেছেন ওয়ালট হুইটম্যান । সাধারণ গদ্যের সঙ্গে তার প্রভেদ নেই, তবু ভাবের দিক থেকে তাকে কাব্য না বলে থাকবার জো নেই। এইখানে একটা তর্জমা করে দিই । লুইসিয়ানাতে দেখলুম একটি তাজা ওক গাছ বেড়ে উঠছে ; একলা সে দাঁড়িয়ে, তার ডালগুলো থেকে শ্যাওলা পড়ছে ঝুলে । লোনা দোসর নেই তার, ঘন সবুজ পাতায় কথা কইছে তার খুশিটি । তার কড়া খাড়া তেজালো চেহারা মনে করিয়ে দিলে আমারই নিজেকে । আশ্চর্য লাগল, কেমন করে এ গাছ ব্যক্ত করছে খুশিতে ভরা আপন পাতাগুলিকে,