পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9.SS এতটা ভারবৃদ্ধি যে সম্ভব হয় তার কারণ পয়ার স্থিতিস্থাপক । ধ্বনির দুই মাত্রা এবং তিন মাত্রা বাংলা ছন্দের আদিম এবং রাঢ়িক উপাদান । তার পরে এই দুই এবং তিনের যোগে যৌগিকমাত্রার ছন্দের উৎপত্তি । তিন+দুই, তিন + চার, তিন + দুই+ চার প্রভৃতি নানাপ্রকার যোগ চলেছে আধুনিক বাংলা ছন্দে । তিন + দুই মাত্রামূলক ছন্দের দৃষ্টান্ত— আঁধার রাতি জেলেছে বাতি অযুত কোটি তারা, আপন কারা ভবনে পাছে 'আপনি হয়। হারা । দেখা যাচ্ছে, এখানে পদশেষের অংশটিকে খর্ব খরা হয়েছে । যদি লেখা যেত।-- আঁধার রাতি জেলেছে বাতি আকাশ ভরি অযুত তারা তা হলে ছন্দের কাছে দেনা বাকি থাকত না । কিন্তু, পূর্বোক্ত প্ৰথম শ্লোকটির পদশেষে পাচ মাত্রার থেকে তিন মাত্রাকে জবাব দেওয়া হয়েছে । তা হলে বুঝতে হবে, সেই তিন মাত্রা দেহত্যাগ করে ঐখানেই বসে আছে যতিকে ভর করে । কিন্তু, এই কৈফিয়াতটা সম্পূৰ্ণ হল বলে মনে হয় না, আরো কথা আছে। প্রকৃতির কাজের অলংকরণতত্ত্বটা আলোচ্য ! দুই পা দুই হাত নিয়ে দেহটা দাড়ালো, দুই কাধে দুটাে মুণ্ড বসালেই সম্মিতি অর্থাৎ symmetry is उा ना काल मृ३ कैाक्षा মাঝখানে একটি মুণ্ড বসিয়ে সমাপ্তিটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে ! কৃষ্ণচুড়ার গাছে ডাটার দু ধারে দুটি করে পত্রগুচ্ছ চলতে চলতে প্রান্তে এসে থামাল একটিমাত্র গুচ্ছে । অলংকরণের ধারা যেখানে পূৰ্ণ হয়েছে সেখানে একটিমাত্র তর্জনী, ছোটাে একটি ইশাবা । সকল ভাষারই যতি আছে, কিন্তু যতিকে বাটখারাস্বরূপ করে ছন্দের ওজন পূরণ বাংলা ছন্দ ছাড়া আর কোনো ছন্দে আছে কি না জানি নে । সংস্কৃত ছন্দে এই রীতি বিরল, তবু একেবারে পাওয়া যায় না। ୪ ଅଗଷ୍ଟ । বদসি যদি কিঞ্চিদপি দন্তরুিচিকৌমুদী হরতি দরতিমিরমতি ঘোরাম, ০ ০ | যতিকে কেবল বিরতির স্থান না দিয়ে তাকে পূর্তির কাজে লাগাবার অভ্যাস আরম্ভ হয়েছে আমাদের ছডার ছন্দ থেকে । ছড়া আবৃত্তি করবার সময় আপনি যতির জোগান দেয় আমাদের ক্যান । কাক কালো বটে, পিক সেও কালো, কালো সে ফিঙের বেশ, তাহার অধিক কালো যে, কন্যা, তোমার চিকন কেশ । এমন করে ছন্দটাকে পুরোপুরি ভরিয়ে দিলে কানের কাছে ঋণী হতে হত না । কিন্তু, এতে ছড়ার জাত যেত। ছড়ার রীতি এই যে, সে কিছু ধ্বনি জোগায় নিজে, কিছু আদায় করে কষ্ঠের কাছ থেকে ; এ দুইয়ের মিলনে সে হয় পূর্ণ। প্রকৃতি আমের মধুরতায় জল মিশিয়েছেন, তাকে আমসত্ব করে তোলেন নি ; সেজন্যে রসজ্ঞ ব্যক্তিমাত্রই কৃতজ্ঞ । তেমনি যথেষ্ট যতি মিশেল করা হয়েছে ছড়ার ছন্দে, শিশুকাল থেকে বাঙালি তাতে আনন্দ পায় । সে সহজেই আউড়েছে কাক কালো, কোকিল কালো, কালো ফিঙের বেশ, Voss Ess BPTo Boss