পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পারস্যে V996? জানি এই উদারবুদ্ধি সকলের, এমন-কি, অধিকাংশ লোকের নেই। তবু সে যে ছোটাে বীজের মতো অতি ছোটো জায়গা জুড়েই নিজেকে প্রকাশ করতে চাইছে। এইটে আশার কথা। বর্তমানে এ 0छjpों, किह उठविवाcठ 0 0शbों नग्र । আর-একটা অখ্যাত কোণে কী ঘটছে। চেয়ে দেখো । রুশীয় তুর্কিস্থানে সোভিয়েট গবর্মেন্ট অতি অল্পকালের মধ্যেই এশিয়ার মরুচির জাতির মধ্যে যে নুতন জীবন সঞ্চার করেছে তা আলোচনা করে দেখলে বিস্মিত হতে হয় । এত দ্রুতবেগে এতটা সফলতা লাভের কারণ এই যে, এদের চিত্তোৎকৰ্য সাধন করতে, এদের আত্মশক্তিকে পূর্ণতা দিতে, সেখানকার সরকারের পক্ষে অন্তত লোভের, সুতরাং ঈর্ষার বাধা নেই । মরুতলে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত এই-সব ছোটো ছোটো জাতিকে আপনি আপনি রিপাব্লিক স্থাপন করতে অধিকার দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া এদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের আয়োজন প্রভূত ও বিচিত্র। পূর্বেই অন্যত্র বলেছি, বহুজাতিসংকুল বৃহৎ সোভিয়েট সাম্রাজ্যে আজ কোথাও সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে মারামারি কাটাকাটি নেই । জারের সাম্রাজ্যিক শাসনে সেটা নিত্যই ঘটত । মনের মধ্যে যে স্বাস্থ্য থাকলে মানবের আত্মীয়সম্বন্ধে বিকৃতি ঘটে না সেই স্বাস্থ্য জাগে শিক্ষায় এবং স্বাধীনতায় । এই শিক্ষা এবং স্বাধীনতা নতুন বর্ষার বন্যাজলের মতো এশিয়ার নদীনালার মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করেছে । তাই বহুযুগ পরে এশিয়ার মানুষ আজ আত্মাবমাননার দুৰ্গতি থেকে নিজেকে মুক্ত করবার জন্যে দাঁড়াল । এই মুক্তিপ্রয়াসের আরম্ভে যতই দুঃখযন্ত্রণা থাক, তবু এই উদ্যম, মনুষ্যগীেরব লাভের জন্যে এই-যে আপন সব-কিছু পণ করা, এর চেয়ে আনন্দের বিষয় আর কিছু নেই। আমাদের এই মুক্তির দ্বারাই সমস্ত পৃথিবী মুক্তি পাবে। এ কথা নিশ্চিত মনে রাখতে হবে, য়ুরোপ আজ নিজের ঘরে এবং নিজের বাইরে আপনি বন্দীদের হাতেই বন্দী । ১৯১২ খৃস্টাব্দে যখন য়ুরোপে গিয়েছিলুম তখন একজন ইংরেজ কবি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “তুমি এখানে কেন এসেছি ।’ আমি বলেছিলুম, “য়ুরোপে মানুষকে দেখতে এসেছি।” যুরোপে জ্ঞানের আলো জ্বলছে, প্ৰাণের আলো জ্বলছে, তাই সেখানে মানুষ প্রচ্ছন্ন নয়, সে নিজেকে নিয়ত নানা দিকে প্ৰকাশ করছে । সেদিন পারস্যেও আমাকে একজন ঠিক সেই প্রশ্নই জিজ্ঞাসা করেছিলেন । আমি বলেছিলাম, ‘পারস্যে যে মানুষ সত্যিই পারসিক তাকেই দেখতে এসেছি।’ তাকে দেখবার কোনো আশা থাকে না। দেশে যদি আলো না থাকে । জ্বলছে আলো জানি । তাই পারস্য থেকে যখন আহবান এল তখন আবার একবার দূরের আকাশের দিকে চেয়ে মন চঞ্চল হল । রোগশয্যা থেকে তখন সবে উঠেছি। ডাক্তারকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলুম না- সাহস ছিল নাগরমের দিনে জলস্থলের উপর দিয়ে রৌদ্রের তাপ এবং কলের নাড়া খেতে খেতে দীর্ঘ পথ বেয়ে চলব। সে সাহসেরও অভাব ছিল । আকাশযানে উঠে পড়লুম। ঘরের কোণে একলা বসে যে বালক দিনের পর দিন আকাশের দিকে তাকিয়ে দূরের আহবান শুনতে পেত। আজ সেই দূরের আহবানে সে সাড়া দিল ঐ আকাশের পথ বেয়েই । পারস্যের দ্বারে এসে নােমলুম দুদিন পরেই। তার পরদিন সকালে পৌঁছলুম। বুশেয়ারে । NO বুশেয়ার সমুদ্রের ধারে জাহাজ-ঘাটার শহর। পারস্যের অন্তরঙ্গ স্থান এ নয় । বৈকালে পারসিক পার্লামেন্টের একজন সদস্য আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন । জিজ্ঞাসা করতে চাইলেন আমি কী জানতে চাই। বললুম, পারস্যের শাশ্বত স্বরূপটি জানতে চাই, যে পারস্য আপন প্ৰতিভায় স্বপ্রতিষ্ঠিত । তিনি বললেন, বড়ো মুশকিল। সে পারস্য কোথায় কে জানে। এ দেশে এক বৃহৎ দল আছে তারা অশিক্ষিত, পুরোনো তাদের মধ্যে অপভ্রষ্ট, নতুন তাদের অনুদগত। শিক্ষিত বিশেষণে যারা খ্যাত তারা Y S 8S