পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পারস্যে \ეMC)Xა মেনে নিতে হল। প্ৰথম পারসিক পার্লামেন্ট খুলল। ১৯০৬ খৃস্টাব্দে অক্টোবরে। এ রাজা মারা গেলেন । ছেলে বসলেন গদিতে, শা। মহম্মদ আলি । পারস্যে তখন প্ৰাদেশিক গবর্নররা ছিল এক-এক নবাব বিশেষ, তারা সকল বিষয়েই দেয় বাধা । প্ৰজারা এদের বরখাস্ত করবার দাবি করলে, আর মাশুল-আদায়ের বেলজিয়ান কর্তাদেরও সরিয়ে দেবার প্রস্তাব পার্লামেন্টে উঠল । বলা বাহুল্য, দেশের লোক পার্লামেন্ট শাসনপদ্ধতিতে ছিল আনাড়ি । দায়িত্ব হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমে ক্রমে তাদের হাত পেকে উঠল। কিন্তু রাজকোষ শূন্য, রাজস্ব বিভাগ ছারখার । অবশেষে একদা ইংরেজে রাশিয়ানে। আপস হয়ে গেল। দুই কর্তার একজন পারস্যের মুণ্ডের দিকে আর-একজন তার লেজের দিকে দুই হাওদা চড়িয়ে সওয়ার হয়ে বসল, অঙ্কুশাররূপে সঙ্গে রইল সৈন্যসামন্ত । উত্তর দিকটা পড়ল রুশীয়ের ভাগে, দক্ষিণ দিকটা ইংরেজের, অল্প একটুখানি বাকি রইল সেখানে পারস্যের বাতি টিম টিম করে জ্বলছে। রাজায় প্রজায় তকরার বেড়ে চলল। একদিন রাজার দল মোল্লার দলে মিশে পড়ল গিয়ে শহরের উপর, পার্লামেন্টের বাড়ি দিলে ভূমিসাৎ করে । কিন্তু দেশকে দাবিয়ে দিতে পারল না, আবার একবার নতুন করে কনস্টিন্টশনের পত্তন হল । ইংরেজ ও রুশ উভয়েই মনে অত্যন্ত ব্যথা পেয়েছে। শাহকে দেশের লোক এমন বিশ্ৰীীরকম ব্যন্ত করছে বলে । বলাই বাহুল্য, নতুন কনস্টিটশনের প্রতি তাদের দরদ ছিল না। রুশীয় কর্নেল লিয়াকভ একদিন সৈনা নিয়ে পড়ল পার্লামেন্টের উপরে । লড়াই বেধে গেল, বড়ো বড়ো অনেক সদস্য গেলেন মারা, কেউ-বা হলেন বন্দী, কেউ-বা গেলেন পালিয়ে। লন্ডন টাইমস বললেন, স্পষ্টই প্রমাণ হচ্ছে স্বরাজতন্ত্র ওরিয়েন্টালদের ক্ষমতার অতীত । তেহেরানকে ভীষণ অত্যাচারে নিজীব করলে বটে, কিন্তু অন্য প্রদেশে যুদ্ধ চলতে লাগল। শেষে পালাতে হল রাজাকে দেশ ছেড়ে, তার এগারো বছরের ছেলে উঠলেন রাজাগদিতে । রাজা যাতে মোটা পেনসন পান ইংরেজ এবং রুশ তার ব্যবস্থা করলেন । রুশীয়ের সাহায্যে পলাতক রাজা আবার এসে দেশ আক্রমণ করলেন । হার হল তার । আমেরিকা থেকে মর্গান শুন্সটার এলেন পারস্যের বিধ্বস্ত রাজস্ববিভাগকে খাড়া করে তুলতে। ঠিক যে সময়ে তিনি কৃতকার্য হয়েছেন, রাশিয়া বিরুদ্ধে লাগল। পারস্যের উপর হুকুম জারি হল শুসন্টারকে বিদায় করতে হবে। প্রস্তাব হল, ইংরেজ এবং রুশের সম্মতি ব্যতীত কোনো বিদেশীকে রাষ্ট্রকার্যে আহবান করা চলবে না । এ নিয়ে পার্লামেন্টে বিরুদ্ধ আন্দোলন চলল। কিন্তু টিকল না । শুসটার নিলেন বিদায়, রাষ্ট্রসংস্কারকরা কেউ-বা গেলেন জেলে, কেউ-বা গেলেন বিদেশে । এইসময়কার বিবরণ নিয়ে শুন্সটার The Strangling of Persia -নামক যে বই লিখেছেন তার মতো শোকাবহ ইতিহাস অল্পই দেখা যায় । এ দিকে যুরোপের যুদ্ধ বাধল। তখন রুশিয়া সেই সুযোগে পারস্যে আপন আসন আরো ফলাও করে নেবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হল । অবশেষে বলশেভিক বিপ্লবের তাড়ায় তারা গেল সরে । এই সুযোগে ইংরেজ বসিল উত্তর-পারস্য দখল করে । নিরন্তর লড়াই চলল দেশবাসীদের সঙ্গে । ১৯১৯ খৃস্টাব্দে সার পার্সি কক্স এলেন পারস্যে ব্রিটিশ মন্ত্রী। তিনি পারসিক গবর্মেন্টের এক দলের কাছ থেকে কড়ার করিয়ে নিলেন যে, সমগ্র পারস্যের আধিপত্য থাকবে ইংরেজের হাতে, তার শাসনকার্য ও সৈন্যবিভাগ ইংরেজের অঙ্গুলিসংকেতে চালিত হবে। একে ভদ্রভাষায় বলে প্রোটেকটােরেট । এর নিগুঢ় অর্থটা সকলেরই কাছে সুবিদিত- অর্থাৎ ওর উপক্ৰমণিকা বৈষ্ণবের বুলিতে, ওর উপসংহার শাক্তের কবলে। যাই হােক, সম্পূর্ণ পার্লামেন্টের কাছে এই সন্ধিপত্র স্বাক্ষরের YB S DBD DL DBBK DK DDSS এই দুর্যোগের দিনে রেজা খা তার কসাক সৈন্য নিয়ে দখল করলেন তেহেরান । ও দিকে সোভিয়েট গবমেন্ট সৈন্য পাঠিয়ে উত্তর-পারস্যে ইংরেজকে প্রতিরোধ করতে এল । ইংরেজ পারস্য ত্যাগ করলে। এতকালের নিরন্তর নিপীড়নের পর পারস্য সম্পূর্ণ নিকৃতি লাভ করল। সোভিয়েট