পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&ኃbr S রবীন্দ্র-রচনাবলী ফকির উপর দিয়ে মাত্ৰাট চালিয়েছ কিন্তু যদি “কই শয্যা, কই বস্ত্ৰ” হত তা হলে কী রকম করে এমন অবৈধাচরণ করতে পারতে ? বস্তুত ইকারের পরে ফাক নেই- ক-এর অ-টাকে দীর্ঘ করে ই-এর হ্রস্বতা পূরণ করা হয় । সে তো সকল হসন্ত বর্ণের সম্বন্ধেই খাটে- “কোথা জল, কোথা স্থল”- এখানে মাত্রার ওজন যদি দেখ। তবে দেখবে ’জ’ যত বড়ো ‘ল তত বড়ো নয়সেইজন্যে জা-টাকে দেড় মাত্রা করতে হয়েছে । তোমার বিধি অনুসারে 'জল'-কে এক মাত্রা করে ফাকের উপরে আর-এক মাত্রা ফেলতে হয় । কিন্তু সেটা সাধু ছন্দের নিয়মবিরুদ্ধ । “সেইত বহিছে বায়’, এখানে তুমি “সেই'-এর "ই"-টিকে কি বিমাত্র বলে গণ্য করবে ।

  • when we two parted” কবিতাটির সম্বন্ধে অনেক দ্বিধা আমার মনে উদয় হয়েছিল কিন্তু শেষকালে অন্য কোনো দৃষ্টান্ত মনে না পড়াতে ওটাকে ত্যাগ করিনি- আমার অভিপ্ৰায় এই ছিল, যদি কেবলমাত্র প্রথম লাইনটা পড়া যায় তা হলে সম-অসম মাত্রার ছন্দের লয়টা ইংরেজের কানে পরিচিত হতে পারে- মনে করা যদি এমন হত

When we two parted Silence and tears তা হলে তো ছন্দ ভঙ্গ হত না- এমন অবস্থায় ‘In' টাকে ফালতো বলে ধরবার অধিকার আছে ; বস্তুত ছন্দের মধ্যে ফালতো অংশের লক্ষণই এই যে, সেটাকে বাদ দিলে মূল ছন্দের তাল কাটে না- ও জিনিসটা ফাকের মধ্যে ঢুকে পড়ে, আসনে ওর স্থান নেই। তথাপি আমার প্ৰবন্ধটার মধ্যে একটু বদল করে দেওয়া গেল- কিন্তু আমার বোধ হয় যে সেটা অনাবশ্যক । অধ্যাপক ধূর্জটিপ্ৰসাদ মুখোপাধ্যায়কে লিখিত তৃতীয় ও পঞ্চম পত্রদ্বয় ‘কাব্যে গদ্যরীতি নামে ১৩৫০ সালে ‘সাহিত্যের স্বরূপ গ্রন্থে মুদ্রিত হইয়াছে। চিঠিপত্র-অংশের পূর্ণতাসাধনের উদ্দেশ্যে পত্র দুইটি পরিশিষ্টে সংকলিত হইল ।

  • মোটকথা’র পদ্যছন্দ’ অংশটি বস্তুত ১৩৪০ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত ও ১৩৪১ বৈশাখের “উদয়ন মাসিকপত্রে ‘ছন্দ' নামে প্ৰকাশিত প্ৰবন্ধের একাংশ । উক্ত প্ৰবন্ধটির এতদন্তিরিক্ত প্ৰধান অংশ ‘বাংলা-ছন্দের প্রকৃতি' নামে মূলগ্রন্থে সংকলিত হইয়াছে ।
  • মোটকথার ‘গদ্যছন্দ' অংশটি কবি সঞ্জয় ভট্টাচাৰ্যকে ১৯৩৫ সালের ২২ মে তারিখে পত্রাকারে লিখিত হইয়াছিল ।

ভাষা ও সাহিত্য -বিষয়ক নানা রচনায় রবীন্দ্ৰনাথ প্রসঙ্গত ছন্দ সম্বন্ধে আলোচনা করিয়াছেন । সেই-সব রচনার অধিকাংশই ইতিপূর্বে রচনাবলীর বিভিন্ন খণ্ডে মুদ্রিত হইয়াছে। “সাহিত্যের পথে’ ( ১৩৪৩ ), ‘বাংলাভাষা পরিচয়' ( ১৯৩৮) ও ‘সাহিত্যের স্বরূপ’ ( ১৩৫০ ) গ্রন্থ তিনখানি ও রবীন্দ্র-রচনাবলীর পরবতী বিভিন্ন খণ্ডে যথাক্রমে সংকলিত হইতেছে । ছন্দ প্রসঙ্গে ‘মানসী", "পুনশ্চ' ও 'ছড়ার ছবির ভূমিকা তিনটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । মানসীর প্ৰথম সংস্করণের ভূমিকা রচনাবলীর সপ্তম খণ্ডে (সুলভ চতুর্থ ) ‘কথা ও কাহিনীর গ্রন্থপরিচয়ে মুদ্রিত হইয়াছে। ‘পুনশ্চর ভূমিকা ঘোড়শ খণ্ডে (সুলভ অষ্টম) এবং ছড়ার ছবির ভূমিকা বর্তমান খণ্ডে যথাস্থানে মুদ্রিত আছে। ছন্দ গ্রন্থের তৃতীয় সংস্করণ (মাঘ ১৩৮২ ) প্রকাশিত হইয়াছে। এই সংস্করণে অনেক নূতন রচনা ও তথ্য সমাহৃত হইয়াছে। পারস্যে “জাপানে-পারস্যো ১৩৪৩ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসে প্ৰথম প্ৰকাশিত হয় । উহার “জাপানে অংশে পূর্বপ্রকাশিত গ্রন্থ ‘জাপানযাত্রী (১৩২৬) এবং ‘পারস্যে' অংশে তৎকালীন নূতন রচনা পারস্যভ্রমণের বৃত্তান্ত একত্র গ্রথিত ও মুদ্রিত হয় ।