পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ner びエb>o88 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী গিয়ে ভজনঘাটা কিনব বেগুন পটােল মুলো, কিনব সজনেডাটা । পৌঁছব আটবাকে, সূৰ্য উঠবে মােঝ গগনে, মহিষ নামবে পাকে । কোকিল-ডাকা বকুল-তলায় রাধব আপন হাতে, কলার পাতায় মেখে নেব। গাওয়া ঘি আর ভাতে । মাখনাগায়ে পাল নামাবে, বাতাস যাবে থেমে ; বনঝাউ-ঝোপ রঙিয়ে দিয়ে সূর্য পড়বে নেমে । বাকদিঘির ঘাটে যাব যখন সন্ধে হবে গোষ্ঠে-ফেরা ধেনুর হাম্বারবে । ভেঙে-পড়া ডিঙির মতো হেলে-পড়া দিন তারা-ভাসা আঁধার-তলায় কোথায় হবে লীন । ভজহরি হংকঙেতে সারাবছর আপিস করেন মামা, সেখান থেকে এনেছিলেন চীনের দেশের শ্যামা, দিয়েছিলেন মাকে, ঢাকার নীচে যখন-তখন শিস দিয়ে সে ডাকে । নিচিনপুরের বনের থেকে কুলির মধ্যে করে ভজহরি আনত ফড়িঙ ধরে । পাড়ায় পাড়ায় যত পাখি খাচায় খাচায় ঢাকা আওয়াজ শুনেই উঠিত নোচে, কাপট দিতে পাখা । কাউকে হাতু, কাউকে পোকা, কাউকে দিত ধান, অসুখ করলে হলুদজলে করিয়ে দিত স্নান । ভজু বলত, “ পোকার দেশে আমিই হচ্ছি দত্যি, আমার ভয়ে গঙ্গাফড়িঙ ঘুমোয় না একরাত্তি । ঝোপে কোপে শাসন আমার কেবলই ধরপাকড়, পাতায় পাতায় লুকিয়ে বেড়ায় যত পোকামাকড় ।” একদিন সে ফাগুন মাসে মাকে এসে বলল, “গোধূলিতে মেয়ের আমার বিয়ে হবে কল্য ।” শুনে আমার লাগল ভারি মজা, এই আমাদের ভজা, এরও আবার মেয়ে আছে, তারও হবে বিয়ে, রঙিন চেলির ঘোমটা মাথায় দিয়ে । শুধাই তাকে “বিয়ের দিনে খুৰ বুৰি ধুম হুবো ?” ভজু বললে, “ধাচার রাজ্যে নইলে কি মান রবে ।