পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बकूर्छब्र षाडी . في مطلا কেদার। বলছিলুম ষে, ওর নাম কী, সাহিত্যের কামড় কচ্ছপের কামড়— বাকে এক বার ধরে, ওর নাম কী, তাকে সহজে ছাড়তে চায় না। আহা, আমন জিনিস কি আর আছে ? বৈকুণ্ঠ । হা হা হা হা! কচ্ছপের কামড় ! আপনার কথাগুলি বড়ো চমৎকার। –এই যে সেই জায়গাটা । তবে শুনুন – হে ভারতভূমি, এক সময়ে তুমি প্রবীণ বীর্যবান পুরুষদিগের তপোস্তৃমি ছিলে ; তখন রাজার রাজত্বও তপস্তা ছিল, কবির কবিত্বও তপস্তারই নামান্তর ছিল। তখন তাপস জনক রাজ্যশাসন করিতেন, তখন তাপস বাল্মীকি রামায়ণগানে তপঃপ্রভাব উৎসারিত করিয়া দিতেন ; তখন সকল জ্ঞান, সকল বিদ্যা, সংসারের সকল কর্তব্য, জীবনের সকল আনন্দ সাধনার সামগ্ৰী ছিল। তখন গৃহাশ্রমও আশ্রম ছিল, অরণ্যাশ্রমও আশ্রম ছিল। আজ যে কুলত্যাগিনী সংগীতবিদ্যা নাট্যশালায় বিদেশী বংশীর কাংস্তকণ্ঠে আর্তনাদ করিতেছে, প্রমোদালয়ে স্বরাসরোবরে স্খলিতচরণে আত্মহত্যা করিয়া মরিতেছে, সেই সংগীত এক দিন ভরতমুনির তপোবলে মূর্তিমান হইয়া স্বৰ্গকে স্বৰ্গীয় করিয়া তুলিয়াছিল ; সেই সংগীত সাধকশ্রেষ্ঠ নারদের বীণাতন্ত্রী হইতে শুভ্ররশ্মিরাশির স্তায় বিচ্ছুরিত হইয়া বৈকুণ্ঠাধিপতির বিগলিত পাদপদ্মনিস্তন্দিত পুণ্য নির্ঝরিণীকে স্নান মর্ত্যলোকে প্রবাহিত করিয়াছিল। হে দুর্তাগিনী ভারতভূমি, আজ তুমি কৃশকায় দীনপ্রাণ রোগজীর্ণ শিশুদিগের ক্রীড়াভূমি ; আজ তোমার যজ্ঞবেদীর পুণ্য মৃত্তিক লইয়া অবোধগণ পুত্তলিক নির্মাণ করিতেছে ; আজ সাধনাও নাই, সিদ্ধিও নাই ; আজ বিষ্ঠার স্থলে বাচালতা, বীর্ষের স্থলে অহংকার এবং তপস্তার স্থলে চাতুর বিরাজ করিতেছে। যে বজ্রবক্ষ বিপুল তরণী এক দিন উত্তাল তরঙ্গ ভেদ করিয়া মহাসমুদ্র পার হইত, আজ সে তরণীর কর্ণধার নাই ; আমরা কয়েকজন বালকে তাহারই কয়েক খণ্ড জীর্ণ কাষ্ঠ লইয়া ভেলা বাধিয়া আমাদের পল্লীপ্রাস্তের পক্ষপৰলে ক্রীড়া করিতেছি এবং শিশুসুলভ মোহে অজ্ঞানস্থলভ অহংকারে কল্পনা করিতেছি, এই ভগ্ন ভেলাই সেই অর্ণবতরী, আমরাই সেই অর্ধে, এবং আমাদের গ্রামের এই জীর্ণপত্র কলুষিত জলকুওই সেই অতলস্পর্শ সাধনসমূদ্র । ঈশানের প্রবেশ ঈশান। বাৰু, খাবার এসেছে। বৈকুণ্ঠ। তাকে একটু বলতে বলে । ঈশান। বসতে বলব কাকে ? খাবার এসেছে।