পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२९० রবীন্দ্র-রচনাবলী এবং স্ত্রীর বোনে যে কত প্রভেদ তা এই কাচা বয়সেই বুঝে নিয়েছ। তা ভাই, শ্বশুরের কোনো কন্যাটিকেই পরের হাতে সমর্পণ করতে কিছুতেই মন সরে না— এ বিষয়ে আমার ঔদার্যের অভাব আছে তা স্বীকার করতে হবে। পুরবালা সামান্ত একটু রাগের মতো ভাব করিয়া গভীর হইয়া বলিল, “দেখে, তোমার সঙ্গে আমার একটা বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে।” অক্ষয়। একটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত তো মন্ত্র পড়ে বিবাহের দিনেই হয়ে গেছে, আবার আর একটা ! পুরবাল । ওগো, এটা তত ভয়ানক নয়। এটা হয়তো তেমন অসহ না হতেও পারে । অক্ষয় যাত্রার অধিকারীর মতো হাত নাড়িয়া বলিল, “সখী, তবে খুলে বলে!” বলিয়া ঝিঝিটে গান ধরিল— কী জানি কী ভেবেছ মনে, খুলে বলো ললনে ! কী কথা হায় ভেসে যায় ওই ছলছল নয়নে ! এইখানে বলা আবশ্বক, অক্ষয়কুমার ঝোকের মাথায় দুটো-চারটে লাইন গান মুখে মুখে বানাইয়া গাহিয়া দিতে পারিতেন। কিন্তু কখনোই কোনো গান রীতিমত সম্পূর্ণ করিতেন না। বন্ধুরা বিরক্ত হইয়া বলিতেন, “তোমার এমন অসামান্ত ক্ষমতা, কিন্তু গানগুলো শেষ কর না কেন ?” অক্ষয় ফস করিয়া তান ধরিয়া তাহার জবাব দিতেন— সথ, শেষ করা কি ভালো ? তেল ফুরোবার আগেই আমি নিবিয়ে দেব আলো ! এইরূপ ব্যবহারে সকলেই বিরক্ত হইয়া বলে, অক্ষয়কে কিছুতেই পারিয়া উঠা যায় না | পুরবালাও ত্যক্ত হইয়া বলিলেন, “ওস্তাদজি, থামো! আমার প্রস্তাব এই যে দিনের মধ্যে একটা সময় ঠিক করে যখন তোমার ঠাট্ট বন্ধ থাকবে – যখন তোমার সঙ্গে দুটো-একটা কাজের কথা হতে পারবে !” অক্ষয়। গরিবের ছেলে, স্ত্রীকে কথা বলতে দিতে ভরসা হয় না, পাছে খপ করে বাজুবন্দ চেয়ে বলে। vtf<tta; 3tta