পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९९२ রবীন্দ্র-রচনাবলী বা সম্প্রতি দুষ্প্রাপ্য হন অন্তত মহাকালীর চৌষটি হাজার যোগিনীর সন্ধান পেলেও এক বার পেট ভরে প্রেমালাপটা করে নিই– ঠিক সেই সময়টাতেই তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ হল আর কি ! পুরবালা। চৌষটি হাজারের শখ মিটল ? অক্ষয় । সে আর তোমার মুখের সামনে বলব না! জাক হবে। তবে ইশারায় বলতে পারি মা কালী দয়া করেছেন বটে। এই বলিয়। পুরবালার চিবুক ধরিয়া মুখটি একটুখানি তুলিয়া সকৌতুকে স্নিগ্ধ প্রেমে একবার নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন। পুরবালা কৃত্রিম কলহে মুখ সরাইয়া লইয়া কহিলেন, “তবে আমিও বলি, বাবা ভোলানাথের নন্দীভৃঙ্গীর অভাব ছিল না, আমাকে বুঝি তিনি দয়া করেছিলেন ।” অক্ষয় । তা হতে পারে, সেই জন্যেই কীর্তিকটি পেয়েছ ! পুরবালা । আবার ঠাট্ট শুরু হল ? অক্ষয় । কার্তিকের কথাটা বুঝি ঠাট্টা ? গা ছয়ে বলছি ওটা আমার অস্তরের বিশ্বাস ! এমন সময় শৈলবালার প্রবেশ । ইনি মেজো বোন। বিবাহের এক মাসের মধ্যে বিধবা। চুলগুলি ছোট করিয়া ছাট বলিয়৷ ছেলের মতো দেখিতে। সংস্কৃত ভাষায় অনার দিয়া বি. এ পাস করিবার জন্য উৎসুক । শৈল আসিয়া বলিল, “মুখুজোমশায়, এইবার তোমার ছোটাে দুটি খালীকে রক্ষা করে ।” অক্ষয়। যদি অরক্ষণীয়া হয়ে থাকেন তো আমি আছি। ব্যাপারটা কী ? শৈল । মার কাছে তাড়া খেয়ে রসিকদাদা কোথা থেকে একজোড় কুলীনের ছেলে এনে হাজির করেছেন, মা স্থির করেছেন তাদের সঙ্গেই তার দুই মেয়ের বিবাহ দেবেন। 特· অক্ষয়। ওরে বাস্রে । একেবারে বিয়ের এপিডেমিক ! প্লেগের মতো ! এক বাড়িতে এক সঙ্গে দুই কন্যাকে আক্রমণ ! ভয় হয় পাছে আমাকেও ধরে। বলিয়া কালাংড়ায় গান ধরিয়া দিলেন— বড়ো থাকি কাছাকাছি তাই ভয়ে ভয়ে আছি। নয়ন বচন কোথায় কখন বাজিলে বাচি না বাচি । শৈল। এই কি তোমার গান গাবার সময় হল ?