পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ २२७ অক্ষয়। কী করব ভাই! রোশনচোঁকি বাজাতে শিখিনি, তা হলে ধরতুম। বল কী, শুভকর্ম | দুই খালীর উদ্বাহবন্ধন ! কিন্তু এত তাড়াতাড়ি কেন ? শৈল। বৈশাখ মাসের পর আসছে বছরে আকাল পড়বে, আর বিয়ের দিন নেই। পুরবালা নিজের স্বামীটি লইয়া মুখী, এবং তাহার বিশ্বাস যেমন করিয়া হোক স্ত্রীলোকের একটা বিবাহ হইয়া গেলেই মুখের দশা । সে মনে মনে খুশি হইয়া বলিল, “তোরা আগে থাকতে ভাবিস কেন শৈল, পাত্র অাগে দেখা যাক তো।” টিলা লোকেদের স্বভাব এই যে, হঠাৎ একদা অসময়ে তাহারা মন স্থির করে, তখন ভালোমন্দ বিচার করিবার পরিশ্রম স্বীকার না করিয়া একদমে পূর্বকার স্থলীর্ঘ শৈথিল্য সারিয়া লইতে চেষ্টা করে। তখন কিছুতেই তাহাদের আর এক মুহূর্ত সবুর সয় না। কত্রী ঠাকুরানীর সেইরূপ অবস্থা। তিনি আসিয়া বলিলেন, “বাবা অক্ষয় ।” । অক্ষয়। কী মা ! i জগৎ । তোমার কথা শুনে আর তো মেয়েদের রাখতে পারিনে ! تپه ইহার মধ্যে এইটুকু আভাস ছিল যে, তাহার মেয়েদের সকল প্রকার দুর্ঘটনার জন্য অক্ষয়ই দায়ী। + 顯 শৈল কহিল, “মেয়েদের রাখতে পার না বলেই কি মেয়েদের ফেলে দেবে মা !” জগৎ । ওই তো ! তোদের কথা শুনলে গায়ে জর আসে। বাবা অক্ষয়, শৈল বিধবা মেয়ে, ওকে এত পড়িয়ে পাস করিয়ে কী হবে বলে দেখি । ওর এত বিদ্যের দরকার কী ? অক্ষয়। মা শাস্ত্রে লিখেছে, মেয়েমানুষের একটা না একটা কিছু উৎপাত থাকা চাই— হয় স্বামী, নয় বিদ্যে, নয় হিষ্টিরিয়া। দেখে না, লক্ষ্মীর আছেন বিষ্ণু, তার আর বিদ্যের দরকার হয়নি, তিনি স্বামীটিকে এবং পেচাটিকে নিয়েই আছেন— আর সরস্বতীর স্বামী নেই, কাজেই তাকে বিষ্ঠে নিয়ে থাকতে হয় ! জগৎ । তা যা বল বাবা, আসছে বৈশাখে মেয়েদের বিয়ে দেবই ! , পুরবালা। ই মা, আমারও সেই মত। মেয়েমানুষের সকাল-সকাল বিয়ে হওয়াই ভালো । শুনিয়া অক্ষয় তাহাকে জনাস্তিকে বলিয়া লইল, “তা তো বটেই। বিশেষত যখন একাধিক স্বামী শাস্ত্রে নিষেধ, তখন সকাল-সকাল বিয়ে করে সময়ে পুষিয়ে নেওয়া চাই ।” * o পুরবালা। আঃ কী বকছ মা শুনতে পাবেন। ; জগৎ। রসিককাক আজ পাজ দেখাতে আসবেন, তা চলমা পুরি, তাদের