পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ ૨૬૭ পুরবালা। আঃ– থামে। অক্ষয় । বসন্তনিশীথে প্রেয়সী— পুরবালা। আঃ— কী বকছ তার ঠিক নেই! b অক্ষয় । বসন্তনিশীথে যখন প্রেয়সী গর্জন করে বলেন, “আমি কালই বাপের বাড়ি চলে যাব, আমার এক দণ্ড এখানে থাকতে ইচ্ছে নেই— আমার হাড় কালী ga|- vstartR-" পুরবালা। হাগো মশায়, কবে তোমার প্রেয়সী বাপের বাড়ি যাব বলে বসন্তনিশীথে গর্জন করেছে ? k অক্ষয় । ইতিহাসের পরীক্ষা ? কেবল ঘটনা রচনা করে নিষ্কৃতি নেই ? আবার সন-তারিখ-স্থদ্ধ মুখে মুখে বানিয়ে দিতে হবে ? আমি কি এতবড়ো প্রতিভাশালী ? রসিক। (পুরবালার প্রতি ) বুঝেছ ভাই, সোজা করে ও তোমার কথা বলতে পারে না— ওর এত ক্ষমতাই নেই– তাই উলটে বলে ; আদরে না কুলোলে গাল দিয়ে আদর করতে হয় । পুরবালা । আচ্ছা মল্লিনাথজি, তোমার আর ব্যাখ্যা করতে হবে না । মা যে শেষকালে তোমাকেই কাশী নিয়ে যাবেন স্থির করেছেন। রসিক। তা, বেশ তো, এতে আর ভয়ের কথাটা কী ? তীর্থে যাবার তো বয়সই হয়েছে। এখন তোমাদের লোলকটাক্ষে এ বৃদ্ধের কিছুই করতে পারবে না— এখন মুক্ষিপ্তবিদগ্ধমুখমধুৱৈলোলৈ কটাক্ষৈরলং ; পুরবাল । সে তো খুব ভালো কথা— তোমার উপরে আর কটাক্ষের অপব্যয় করতে চাইনে, এখন চন্দ্রচূড় চরণে চলে— তা হলে মাকে ডাকি ! ! রসিক । ( করজোড়ে ) বড়দিদি ভাই, তোমার মা আমাকে সংশোধনের বিস্তর চেষ্টা করছেন, কিন্তু একটু অসময়ে সংস্কারকার্ধ আরম্ভ করেছেন— এখন তার শাসনে কোনো ফল হবে না। বরঞ্চ এখনও নষ্ট হবার বয়স আছে, সে বয়সটা বিধাতার কৃপায় বরাবরই থাকে, লোলকটাক্ষটা শেষকাল পর্যন্ত খাটে, কিন্তু উদ্ধারের বয়স আর নেই। তিনি এখন কাশী যাচ্ছেন, কিছুদিন এই বৃদ্ধ শিশুর বুদ্ধিবৃত্তির উন্নতিসাধনের ছত্রাশ পরিত্যাগ করে শাস্তিতে থাকুন— কেন তোরা তাকে কষ্ট দিবি ।