পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२¢8 রবীন্দ্র-রচনাবলী জগত্তারিণীর প্রবেশ জগত্তারিণী। বাবা, তা হলে আসি । অক্ষয়। চললে না কি মা ? রসিকদাদ যে এতক্ষণ দুঃখ করছিলেন যে তুমি— রসিক। (ব্যাকুলভাবে ) দাদার সকল কথাতেই ঠাট্টা ! মা, আমার কোনো দুঃখ নেই– আমি কেন দুঃখ করতে যাব ? অক্ষয় । বলছিলে না, ষে, বড়োমা একলাই কাশী যাচ্ছেন, আমাকে সঙ্গে নিলেন না ? রসিক। হা, সে তো ঠিক কথা । মনে তো লাগতেই পারে— তবে কি নাম যদি নিতান্তই— জগত্তারিণী। না বাপু, বিদেশে তোমার রসিকদাদাকে সামলাবে কে ? ওঁকে নিয়ে পথ চলতে পারব না । পুরবালা । কেন মা, রসিকদাদাকে নিয়ে গেলে উনি তোমাকে দেখতে শুনতে পারতেন । জগত্তারিণী। রক্ষে করে, আমাকে আর দেখে শুনে কাজ নেই। তোমার রসিকদাদার বুদ্ধির পরিচয় ঢের পেয়েছি। রসিক। (টাকে হাত বুলাইতে বুলাইতে ) তা মা, যেটুকু বুদ্ধি আছে তার পরিচয় সর্বদাই দিচ্ছি— ও তো চেপে রাখবার জো নেই— ধরা পড়তেই হবে । ভাঙা চাকাটাই সব চেয়ে খড়, খড়, করে— তিনি যে ভাঙা সেটা পাড়ামৃদ্ধ খবর পায়। সেই জন্যেই বড়োমা চুপচাপ করে থাকতেই চাই, কিন্তু তুমি যে আবার চালাতেও ছাড় नी । নিজের শৈথিল্যে যাহার কিছুই মনের মতে হয় না, সর্বদা তৎসনা করিবার জন্ত তাহার একটা হতভাগ্যকে চাই । রসিকদাদ জগত্তারিণীর বহিঃস্থিত আত্মগ্লানিবিশেষ । জগত্তারিণী। আমি তা হলে হারানের বাড়ি চললুম, একেবারে তাদের সঙ্গে গাড়িতে উঠব— এর পরে আর যাত্রার সময় নেই। পুরো, তোরা তো দিনক্ষণ মানিসনে, ঠিক সময়ে ইস্টেশনে যাস । র্তাহার কস্তাজামাতার অসামান্ত আসক্তি মা বেশ অবগত ছিলেন। পঞ্জিকার খাতিরে শেষ মুহূর্তের পূর্বে তাহদের বিচ্ছেদসংঘটনের চেষ্টা তিনি বৃথা বলিয়াট জানিতেন । কিন্তু পুরবালা যখন বলিল “মা আমি কাণী যাব না", সেটা তিনি বাড়াবাড়ি