পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬২ রবীন্দ্র-রচনাবলী পূর্ণ। (ফুলের মালার দিকে চাহিয়া ) সন্ন্যাসধর্মেই কি তোমার অসামান্ত দখল আছে না কি ? ঐশ। সেই কথাই তো হচ্ছিল। সন্ন্যাসধর্ম তুমি কাকে বল শুনি। পূর্ণ। ষে ধর্মে দর্জি ধোবা নাপিতের কোনো সহায়তা নিতে হয় না, তাতিকে একেবারেই অগ্রাহ করতে হয়, পিয়ার্স সোপের বিজ্ঞাপনের দিকে দৃকপাত করতে হয় नों শ্ৰীশ । আরে ছি, সে সন্ন্যাসধর্ম তো বুড়ো হয়ে মরে গেছে, এখন নবীন সন্ন্যাসী' বলে একটা সম্প্রদায় গড়তে হবে— পূর্ণ। বিদ্যাম্বন্দরের যাত্রায় যে নবীন সন্ন্যাসী আছেন তিনি মন্দ দৃষ্টান্ত নন, কিন্তু তিনি তো চিরকুমার-সভার বিধানমতে চলেননি। ঐশ। যদি চলতেন তা হলে তিনিই ঠিক দৃষ্টান্ত হতে পারতেন। সাজে সজ্জায় বাক্যে আচরণে সুন্দর এবং স্বনিপুণ হতে হবে— পূর্ণ। কেবল রাজকন্যার দিক থেকে দৃষ্টি নামাতে হবে, এই তো ? বিনি-স্বতোর মালা গাঁথতে হবে, কিন্তু সে মালা পরাতে হবে কার গলায় হে ? 瀛 শ্ৰীশ। স্বদেশের । কথাটা কিছু উচ্চশ্রেণীর হয়ে পড়ল। কী করব বলো, মালিনী মাসি এবং রাজকুমারী একেবারেই নিষিদ্ধ, কিন্তু ঠাট্ট নয় পূর্ণবাবু— পূর্ণ। ঠাট্টার মতো মোটেই শোনাচ্ছে না, ভয়ানক কড়া কথা একেবারে খট্রখটে শুকনো। தி ঐশ । আমাদের চিরকুমার-সভা থেকে এমন একটি সন্ন্যাসী-সম্প্রদায় গঠন করতে হবে যারা রুচি শিক্ষা ও কর্মে সকল গৃহস্থের আদর্শ হবে। যারা সংগীত প্রভৃতি কলাবিদ্যায় অদ্বিতীয় হবে আবার লাঠি-তলোয়ার খেলা, ঘোড়ায় চড়া, বন্দুক লক্ষ করায় পারদর্শী হবে— পূর্ণ। অর্থাৎ, মনোহরণ এবং প্রাণহরণ দুই কর্মেই মজবুত হবে। পুরুষ দেবীচৌধুরানীর দল আর-কি। ঐশ। বঙ্কিমবাবু আমার আইডিয়াটা পূর্বে হতেই চুরি করে রেখেছেন, কিন্তু ওটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের নিজের করে নিতে হবে । পূর্ণ। সভাপতি মশায় কী বলেন ? ঐশ। তাকে ক’দিন ধরে বুঝিয়ে বুঝিয়ে আমার দলে টেনে নিয়েছি। কিন্তু তিনি তার দেশালাইয়ের কাঠি ছাড়েননি। তিনি বলেন, সন্ন্যাসীরা কৃষিতত্ত্ব বঙ্তত্ব প্রভৃতি শিখে গ্রামে গ্রামে চাষীদের শিখিয়ে বেড়াবে, এক টাকা করে শেয়ার নিয়ে একটা